আগামী বছর প্রাথমিকে যুক্ত হচ্ছে প্রোগ্রামিং শেখার পাঠ্যবই

আগামী বছর প্রাথমিকে যুক্ত হচ্ছে প্রোগ্রামিং শেখার পাঠ্যবই

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
আগামী বছর থেকেই প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে প্রোগ্রামিং শেখার পাঠ্যবই যুক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

শুক্রবার (১১ জুন) ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার (এনএইচএসপিসি) সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য দেন পলক।

‘জানুক সবাই দেখাও তুমি’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রোগ্রামিং শেখানোর লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনেই আয়োজিত হয় এ বছরের আয়োজন।

আয়োজনের সমাপনী পর্বে ডিজিটাল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পলক বলেন, আগামী বছরেই প্রাথমিকে প্রোগ্রামিং শিক্ষার পাঠ্যবই যুক্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১ সালের রূপকল্প শুধুমাত্র শ্রমনির্ভর অর্থনীতি দিয়ে বাস্তবায়ন করা যাবে না। শ্রমনির্ভর অর্থনীতির পাশাপাশি মেধাকে সঠিকভাবে বেশি করে কাজে লাগাতে হবে, তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে। শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ নয়, ডিজিটাল বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে আমাদের মেধাবী তরুণরা। তাদের সুযোগ্য করে গড়ে তুলতে চাইলে এবং আমরা যদি তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল বিশ্বের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই; তাহলে ঠিক আবশ্যিকভাবেই তাদের কম্পিউটারের ভাষা প্রোগ্রামিং শেখাতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী তরুণদের স্বপ্নপূরণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যৎ দক্ষতা নির্ভর প্রযুক্তির ভাষা প্রোগ্রামিং জানা থাকলে পৃথিবীর সব ভাষাতেই যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়াও কিছুদিন পর যখন ড্রাইভারলেস গাড়িগুলো চলবে তখন এগুলো চালানোর জন্য প্রোগ্রামিং জানতে হবে। বুয়েটের সহযোগিতায় ৯ ধরনের ভাষা শেখার জন্য আমরা ‘ভাষাগুরু’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছি। এখন ভাষা না শিখেও কেউ যদি সফটওয়্যার তৈরি করতে পারেন, আপনার কাছে যদি সেই অ্যাপ্লিকেশন থাকে তাহলে স্প্যানিশ বা আরবি না শিখেও যদি প্রযুক্তি ভাষা শেখা যায় তাহলে পৃথিবীর সব ভাষাতেই যোগাযোগ করা যাবে।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ।

দেশের সব জেলা এবং ৪৪৪ উপজেলা থেকে ১১ হাজার ৬৯৩ জন শিক্ষার্থী চার ঘণ্টাব্যাপী এই প্রোগ্রামিং এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে তিন হাজার ৯৫ জন শিক্ষার্থীই ছিল ছাত্রী।

পরে প্রতিমন্ত্রী প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। এনএইচএসপিসি ২০২১ এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দেবজ্যোতি দাশ সৌম্য (জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট), প্রথম রানার আপ কাজী নাদিদ হোসেইন (খুলনা জিলা স্কুল, খুলনা) এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়াস লাবিব অরিয়ন (এস এফ এক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা)।

সিনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন যারিফ রহমান (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ষ্কুল, রাজশাহী), প্রথম রানার আপ মামনুন সিয়াম (চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম) এবং দ্বিতীয় রানার আপ মো. নাফিস উল হক সিফাত (হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম)।

কুইজ প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাহির তাজওয়ার (সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা ), প্রথম রানার আপ নিতীশ সরকার সোম (লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সিগঞ্জ) এবং দ্বিতীয় রানার আপ সামিরা তাসনিম (সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা)।

সিনিয়র ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাহিয়ান ইয়াজদান রাহমান (সানবিমস, ঢাকা), প্রথম রানার আপ ধ্রুব মণ্ডল (বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল) এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়া চক্রবর্তী (মুমিনুন্নিসা সরকার মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ)।

বিজয়ীদের মধ্য থেকে প্রোগ্রামিংয়ের দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে ল্যাপটপ এবং কুইজে দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে স্মার্ট ফোন উপহার দেওয়া হবে।