আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সাকিব 

আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সাকিব 

স্পোর্টস ডেস্ক :
নানা নাটকীয়তার পর দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলতে রাজি হওয়া সাকিব আল হাসান ১৪তম আইপিএল থেকেই ‘মানসিক সমস্যায়’ ভুগছেন। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে মাঝপথে স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএল থেকে (ভারত) দেশে ফিরে তাকে পালন করতে হয়েছিল কঠোর কোয়ারেন্টাইন। সে সময় সাকিবের মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, ‘আত্মহত্যার চিন্তাও করেছিলেন তিনি।’

সম্প্রতি ঘরের মাঠে আফগানিস্তান সিরিজে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি দেশসেরা এ অলরাউন্ডার। সিরিজ শেষে এক বিস্ফোরক মন্তব্যও করে বসেন সাকিব। জানান, আফগানিস্তান সিরিজে খেলা ক্রিকেট তিনি উপভোগ করেননি!

এমনকি ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’ থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও যেতে চাননি সাকিব। যদিও শেষ পর্যন্ত নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাকিবের প্রোটিয়া সফরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনই তার গুরু নাজমুল আবেদিন ফাহিম জানালেন আরেক বিস্ফোরক তথ্য। বললেন, ‘মানসিক বিপর্যস্ত থাকায় সাকিব আত্মহত্যার চিন্তাও করেছিলেন।’

সাকিবের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া-না যাওয়ার নাটকের পর বেসরকারি টেলিভিশন যুমনা টিভির স্পোর্টস বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে সাকিবের ক্রিকেট গুরু নাজমুল আবেদিন ফাহিম (স্যার) এমন কথা বলেন।

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘আইপিএলের (১৪তম আসর) বায়ো-বাবল থেকে আসার পর সাকিবকে দেশে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হয়েছে। যেটার জন্য সাকিব একেবারে প্রস্তুত ছিল না। ওদেরকে (সাকিব, মোস্তাফিজ) বলা ছিল, দুইদিন কঠোর কোয়ারেন্টাইন করতে হবে, তারপর চলে যেতে পারবে। তবে ওকে (সাকিব) ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হয়েছিল। এটা ওর জন্য প্রথম ধাক্কা। আমি জানি যে, তখন ও (সাকিব) সুইসাইডাল চিন্তা-ভাবনার মধ্যে এসেছিল।’

সাম্প্রতিক সময়েও মানসিকভাবে ‘সুস্থ নন’ সাকিব আল হাসান। যার কারণে আফগানিস্তান সিরিজে নিজের মতো খেলতে না পারা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে সরিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা জন্ম হয়েছিল। তবে আইপিএলের ১৫তম আসরের নিলামে দল না পাওয়ায় সাকিব মানসিকভাবে আরও বড় আঘাত পেয়েছেন বলে ধারণা করছেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম। এটাও সাকিবের মানসিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘এমন হতেই পারে সে নিজেকে অবমূল্যায়িত মনে করেছে (আইপিএলে দল না পেয়ে)। সেটা একটা আঘাত হতে পারে। আপনি একজন আর্টিস্ট যেখানে আপনার জায়গা পাওয়ার দরকার ছিল, নিশ্চিত ছিলেন, তবে সেটা পাননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনি আপনাকে নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে দিয়েছেন। সেটা আপনাকে খারাপভাবে আঘাত করেছে, এটা হতে পারে কিন্তু। যেকোনো মানুষের হতে পারে। অনেক কারণেই অনেক কিছু হতে পারে। সাকিবের বিষয়েও এটা হতে পারে।’

ক্রিকেটারদের মানসিক অবসাদের ভোগার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। মানসিক অবসাদের কারণে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন অনেক ক্রিকেটার। জোনাথান ট্রট, সারাহ টেইলর, মার্কস ট্রেসকোথিকের মতো ক্রিকেটাররা ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে থাকা অবস্থায় মানসিকভাবে সুস্থ না থাকায় ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন। সাকিবও কি ওই পথে হাঁটবেন? নাকি সুস্থ হয়ে আবারও ফিরবেন নিজের সেই চিরচেনা ছন্দে? এই উত্তরের অপেক্ষায় এখন পুরো বাংলাদেশ।