দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা : মির্জা ফখরুল

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা : মির্জা ফখরুল

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এত উন্নয়নের কথা বলছে সরকার, তাহলে দেশে অশান্তি কেন? এই সরকারের একটাও ভালো কাজ নেই। ৭০ টাকার নিচে চাল পাওয়া যায় না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। মানুষ আজ যাবে কোথায়। বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। 

শুক্রবার বেলা ১১টায় সিলেট সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি মাঠে মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রথান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজ কোথাও আইনের শাসন নেই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ যা ইচ্ছা তাই করছে। হামলা-মামলা, হত্যা ও গুম করে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের মানুষ আরও জেগে উঠছে। তারা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া সিলেট থেকেই কর্মসূচি শুরু করতেন। আপনারা এখান থেকে তার মতো আন্দোলন ও কর্মসূচি শুরু করুন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা সংবিধান মানে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‌‘১৯৭২ সালে এ দেশের মানুষ যে সংবিধান রচনা করেছিলেন সেটাকে বারবার কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর একটা সংবিধান করেছে। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হবে। কিন্তু তারা সংবিধানই মানে না। রাতের আঁধারে ভোট দিয়ে আবার ক্ষমতায় আসার পাঁয়তারা করছে।

দেশের অর্থনীতির অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশে টাকা পাচার করছে। ব্যাংক খালি করছে। আবার পদ্মাসেতু, উড়াল সেতু, মেট্রোরেলসহ নানা বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অতিরিক্ত টাকা খরচ করছে। আমাদের সময় পদ্মাসেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। তারা ৩০ কোটি টাকায় সেতু করেছে। ভারতের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে দেড় লাখ কোটি টাকার লোকসান দিচ্ছে। অথচ দেশে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। মানুষ খেতে পারছে না। আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। আজ সকল শিক্ষাঙ্গন ছাত্রলীগের দখলে। 

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকির সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক রেজউল হাসান লোদী কয়েস, সালেহ আহমদ খসরু ও হুমায়ন কবির সাহিনের পরিচালনায় সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম এ জাহিদ, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী ও তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিলেট সিটি মেয়র ও বিএনপির নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল গাফফার, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তব্যের আগে মির্জা ফখরুল জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। বিকালে কাউন্সিল অনুষ্টিত হবে। এতে মহানগরের ২৭টি ওয়াডের্র ১ হাজার ৯১৭ জন কাউন্সিলর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। তিনটি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে- সভাপতি পদে সাবেক মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও এমদাদ হোসেন চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউল করিম নাচন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ শফি সাহেদ, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা কামাল ফরহাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।