মৌলভীবাজারে চা বাগানে পরীক্ষামূলক কমলা চাষ

মৌলভীবাজারে চা বাগানে পরীক্ষামূলক কমলা চাষ

রাজনগর সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯৩টি চা বাগান। চা বাগানের পতিত জমিতে কমলা চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কমলা চাষ হতে পারে চা বাগানের জন‍্য অতিরিক্ত লাভজনক প্রজেক্ট। বিশেষজ্ঞরা জানান, আবহওয়া জলবায়ু ও মাটির অম্লত্বের কারণে এর সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ভাবে বিষমুক্ত ফলের চাহিদাও পুরণ হবে। আর এর প্রমাণ হয়েছে জেলার কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইনি চা বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে কমলা চাষে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মৌলভীবাজার জেলার চা বাগানে এই প্রথম কমলা চাষ।

বাগানে দেখা গেছে, সারি সারি কমলার গাছ লাগানো হয়েছে এক টিলায়। ওই টিলার নাম দেওয়া হয় কমলা বাড়ি। কমলা বাড়ি নামেই সবার কাছে পরিচিত।

চা বাগানের প্লানটেশনের বাহিরে থাকা টিলা ভূমিতে কমলা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। বাগান ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইনি চা বাগানে। বাগানের ৪ নং সেকশনের ২২ একর ভূমির এক টিলায় রয়েছে কমলার বাগান। সবুজ গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাকা আধপাকা কমলা ঝুলে আছে। এমন দৃশ্যেরই দেখা মিলল  ওই বাগানের গভীরে একটি টিলায়।

শ্রমিকরা জানায় দু’বছর যাবত কমলা বাড়িতে গাছে কমলা আসতে শুরু করেছে। বাগান কর্তৃপক্ষ তেমন খেয়াল করেন না। পাকা কমলা বানর ও বনো শুকুরে নষ্ট করে। তারা যত্নশীল হলে কমলা বিক্রি করে বাগানের আয় বৃদ্ধি করা যেতো।

বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা নতুন করে ২২ একর টিলা ভূমিতে কমলা চাষের প্লানটেশন করেছেন। বিষমুক্ত ফল উৎপাদনের জন্য । এখনো বাণিজ্যক চিন্তা ভাবনা করেননি তারা ।

কথা হলে বাগানে কর্মরত চা শ্রমিক জগন্নাত রাজভর,সঞ্জিব পাশি ও মুন্নি পাশি বলেন, বাগানের শ্রী-বৃদ্ধির জন্য কমলা চাষ করা হয়েছে। কর্তপক্ষ যত্নশীল হলে কমলা চাষ  লাভজনক হতে পারতো। প্রজাপতি কমলার গায়ে বসলে কমলা ঝরে পড়ে। এ ছাড়া বনো শুকর বানর কমলা নষ্ট করে ফেলে।

বাগানের সিনিওর  ব্যবস্থাপক মাবুদ আলী বলেন, নিজ হাতে গাছ থেকে বিষমুক্ত ফল খাওয়ার স্বাদ ভোগ করার চিন্তা নিয়ে আমরা পরীক্ষামুলক এই প্রথম কমলা চাষ করেছি। এখানে প্রচুর কমলা এসেছে। এখনো বানিজ্যক চিন্তা ভাবনা করা যাচ্ছে না। মালিক পক্ষের লোকজন আসলে তারা দেখে আনন্দ পায়। চা বাগানের আকর্ষন বাড়াতে কমলা বাগান করা হয়েছে। তবে বাগানে কমলা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমান বলেন সিলেট ও চট্রগ্রামের মাটিতে অম্লত্ব বেশি এবং অনুকূল জলবায়ু আবহওয়া থাকায় ওই এলাকা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল চাষে জন‍্য উপযোগী। এতে কমলা চাষের সম্ভবনা রয়েছে।
মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, আমার জানা মতে মৌলভীবাজার জেলার আর কোন চা বাগানে কমলা চাষ করা হয়নি। ওই বাগানে একজন কৃষিবিদ রয়েছেন। তার প্রচেষ্টায় এখানে কমলা চাষ হয়েছে। বাগানের চা-প্লানটেশনের বাহিরের খালি জমিতে প্রচুর কমলা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।