শুভ জন্মদিন: আবুল মাল আবদুল মুহিত

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ৮৮তম জন্মদিন আজ সোমবার। ১৯৩৪ সালের এই দিনে সিলেট শহরের এক সল্ফ্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শিক্ষা, সরকারি চাকরি, রাজনীতি, অর্থনীতি, সাহিত্য মিলিয়ে বর্ণাঢ্য জীবন তার। বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহিত ভাষাসংগ্রামেও অংশ নিয়েছেন।
জন্মদিনে পারিবারিক অনুষ্ঠান থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমার জন্মদিনে সবসময়ই পারিবারিক আয়োজন থাকে। তাতে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়রা স্বেচ্ছায় অংশ নেন। এবারও থাকবে। তবে করোনার কারণে হয়তো অনেকে আসবেন না। আমরা ১১ ভাইবোন জীবিত আছি। আমাদের সবার বড় বোন আছেন। বড় ভাই মারা গেছেন। সবাই থাকবেন। আমার জন্মদিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই।'
আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকার আক্ষেপ জানালেন তিনি। মুহিত বলেন, দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল প্রয়োজন। বিএনপি সেই ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ। যতদিন বিএনপির নেতৃত্বে খালেদা জিয়া থাকবেন, ততদিন তা সম্ভবও নয়। কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) দেশের স্বার্থ নিয়ে ভাবেন না।
মুহিত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অবহেলিত মানুষের আবাসিক সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন। এটি বিশাল কাজ। ঝুপড়ি থেকে তুলে নিয়ে কাউকে নিজের বাড়ি দেওয়া, হাতে স্থায়ী বন্দোবস্তের কাগজ দেওয়া, একটা স্বপ্ন দেওয়া শুধু কল্যাণ রাষ্ট্রের পক্ষেই সম্ভব। অন্য সরকার হলে ক্যাপিটাল প্রাসাদ বা সিটি হতো। সেখানে কল্যাণের কিছু থাকত না।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরের বছর একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার আগে অংশ নেন ভাষা আন্দোলনে। ছাত্রজীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপিও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৬ সালে তিনি যোগ দেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি)। সিএসপিতে যোগ দিয়ে তিনি ওয়াশিংটন দূতাবাসে পাকিস্তানের কূটনীতিকের দায়িত্ব নেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের জুনে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করেন। ওই সময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধ, আত্মজীবনীসহ এ যাবত তিনি ২৯টি বই লিখেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। এরপর টানা দশ বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে এরশাদ সরকারের সময়ে ১৯৮২ থেকে ৮৩ সাল পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মোট ১২টি জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন তিনি।
মুহিতের বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন সিলেট জেলা মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম নেতা। মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরীও সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে মুহিতের অবস্থান তৃতীয়। দুই ছেলে ও এক মেয়ে তার। ছোট ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী।-সূত্র : সমকাল