সিলেট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শতবর্ষ উদযাপন
স্টাফ রিপোর্টার: বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শতবর্ষ উদযাপন করলো ভোকেশনাল শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ‘সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ’। গতকাল শুক্রবার ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ২য় দিন নতুন পুরানোদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৌলভীবাজার- ২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, বিশ্বের যে দিকে তাকাবেন, দেখবেন কর্মমুখী শিক্ষাকে যারাই গুরুত্ব দিয়েছে, তারাই দ্রুত এগিয়ে গেছে। বর্তমান সরকার আমাদের দেশেও কর্মমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে টিটিসি প্রতিষ্ঠা করছে। যেখানে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা কেবল দেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও উচ্চ শিক্ষায় দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। আমাদের দেশেও কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি জোর দিতে হবে।
শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন সিলেটের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও লিডিং ইউনিভার্সিটিসহ অসংখ্য শিক্ষা ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দানবীর ড. রাগীব আলী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের সভাপতি শাহ মোঃ হারুন অর রশিদ চিশতি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর তাকবীর ইসলাম পিন্টু, সংরক্ষিত কাউন্সিলর আয়শা আক্তার কলি, সিলেট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ সন্তোষ চন্দ্র দেবনাথ, আব্দুল জব্বার জলিল শিক্ষা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল, সিলেট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ধর্ম শিক্ষক মোঃ আশরাফুল করিম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি, এশিয়ান টেলিভিশনের সিলেট প্রতিনিধি রোটারিয়ান শাহজাহান সেলিম বুলবুল পিএইচএফ, সহ সভাপতি আবু সিদ্দিক সুবেল, সহ-সভাপতি এডভোকেট আবু সালেহ চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উজ্জ্বল কুমার দে, রেজিষ্ট্রেশন সম্পাদক আনিসুর রহমান, সহ- রেজিষ্ট্রেশন সম্পাদক আরিফ আহমদ আসিফ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন পরিকল্পনা সম্পাদক হাবিবুর রশিদ জনি ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাকিব হাসান। অনুষ্ঠান শেষে সিলেটের জনপ্রিয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এমপি আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বিশ্বে উপযুক্তভাবে টিকে থাকার জন্য সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাহলে উন্নত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হবে। অন্যথায় ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে পারবোনা। এজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যতানে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কর্মমুখী শিক্ষার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানকে উচ্চতর শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়া এখন সময়ের দাবি। স্মৃতিচারণ করে দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, অসচেতনতার কারণে এক সময় এই প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পড়াশোনা করাতে আগ্রহী ছিলেন না অনেক অভিভাবক। তিনি আরো বলেন, ছোটবেলা এই রাস্তা দিয়ে রাজা জিসি স্কুলে আসতে হতো। তখন দেখেছি এই প্রতিষ্ঠানের দৈন্যদশা। দীর্ঘ পথ মাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটি শতবর্ষ পেরিয়েছে। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজকে এগিয়ে নিতে হবে অনেক দূর।
দানবীর ড. রাগীব আলী আরো বলেন, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। দেশ ও জাতিকে উন্নতির সোপানে নিয়ে যেতে হলে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শতবর্ষ উদযাপন পরিষদের সভাপতি শাহ মোঃ হারুন অর রশিদ চিশতি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।