অধিনায়ক যখন দলের বোঝা

অধিনায়ক যখন দলের বোঝা

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
শুধু অধিনায়কত্ব করার জন্য বুদ্ধিজীবী কাউকে দলে নেওয়ার নজির কোনোকালেই ছিল না। সাধারণত দলের তারকা পারফর্মারদের মধ্য থেকে একজনের কাঁধে পড়ে নেতৃত্বের গুরুভার। যেন পারফর্ম করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাকিদের উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, দলের সবার কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারেন। কিন্তু এবারের টি২০ বিশ্বকাপে অধিকাংশ অধিনায়কই পারফর্ম করতে পারছেন না। সেমিতে ওঠা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম একেবারেই ছন্দে নেই। উপমহাদেশের আরেক সেমিফাইনালিস্ট ভারতের রোহিত শর্মাও রান খরায় ভুগছেন। প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা তো দলের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছিলেন। একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চেরও। অধিনায়কদের মধ্যে শুধু কেন উইলিয়ামসন, জস বাটলারই কিছুটা রানে আছেন।

টেম্বা বাভুমা
অধিনায়কদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে। বিশ্বকাপের ৫ ম্যাচে ওপেন করতে নেমে ১১২.৯০ স্ট্রাইক রেটে মোট ৭০ রান করেছেন তিনি। দাপটের সঙ্গে আসর শুরু করেও ডাচদের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে বিদায় নিয়েছে প্রোটিয়ারা। দলের এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা হচ্ছে বাভুমাকে। সাবেক অসি ক্রিকেটার টম মুডি বাভুমাকে প্রোটিয়া স্কোয়াডের 'শ্বেতহস্তী' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর টকশো 'টাইম আউট' এ মুডি বলেন, 'সন্দেহাতীতভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা স্কোয়াডের শ্বেতহস্তী ছিল বাভুমা। তার চেয়ে দক্ষ ও ছন্দে থাকা ব্যাটার দলটির ডাগ আউটে বসে ছিলেন। অবশ্যই তাদের খেলানো উচিত ছিল। এমন একজনকে বয়ে বেড়ানো কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল, সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার মূল্যায়ন করা উচিত, বিশেষ করে টপঅর্ডারে।'

অ্যারন ফিঞ্চ
বাভুমার মতো অবস্থা ছিল অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চেরও। আরব আমিরাতে গত টি২০ বিশ্বকাপ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেও এবার ঘরের মাঠে তিনি ছিলেন ব্যর্থ। বিশ্বকাপে তিন ম্যাচ খেলে ১০৭ রান করেন তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেটের অবস্থা ছিল খুবই বাজে। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটে বলই লাগাতে পারছিলেন না তিনি। এজন্য তাঁকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন অসি কিংবদন্তি অ্যালান বর্ডার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৬৩ রান করলেও হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ায় শেষ গ্রুপ ম্যাচটি খেলতে পারেননি তিনি।

বাবর আজম
পাকিস্তান সেমিফাইনালে গেলেও একেবারেই ছন্দে নেই দলটির অধিনায়ক বাবর আজম। অধিনায়কদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা তাঁর। চলতি বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে মাত্র ৩৯ রান করেছেন তিনি। শেষ গ্রুপ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫ রান ছাড়া আর কোনো ম্যাচে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। অথচ পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনের মূল ভরসা তিনি।

রোহিত শর্মা
ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাও ফর্মে নেই। ৫ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৮৯ রান। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫৩ রানের ইনিংসটি ছাড়া ব্যাট হাতে তেমন কিছুই করতে পারেননি তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১০৯.৮৭। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ গ্রুপ ম্যাচে ভারত মরিয়া হয়ে চেয়েছিল অধিনায়ক যেন রানে ফেরে। সে ম্যাচেও তিনি ব্যর্থ হওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তা নিয়েই সেমিতে নামবে ভারত।

সাকিব আল হাসান
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৫ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৪৪ রান। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে কিছুটা পুষিয়ে দিয়েছেন তিনি। বাঁহাতি এ স্পিনার ৫ ম্যাচে ৬ উইকেট পেয়েছেন এবং কোনো ম্যাচেই খুব বেশি রানও দেননি। বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও ভালোই অবদান রেখেছেন সাকিব। বিশেষ করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শন উইলিয়ামসনকে অবিশ্বাস্যভাবে তাঁর রান আউট করে দেওয়াটা ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

দাসুন সানাকা
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন সানাকার ব্যাটিংয়ের অবস্থাও ভীষণ বাজে। প্রথম রাউন্ড ও সুপার টোয়েলভ মিলিয়ে ৭ ম্যাচে ৮০ রান করেছেন তিনি। বল হাতেও তেমন কিছু করতে পারেননি। তিন ম্যাচে বোলিং করে ১টি মাত্র উইকেট পেয়েছেন এ মিডিয়াম পেসার।