আসাম ও মেঘালয়ে বন্যায় নিহত ৩৬

আসাম ও মেঘালয়ে বন্যায় নিহত ৩৬

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হল ভারতের আসাম-মেঘালয়ে। আনন্দ বাজার পত্রিকা জানিয়েছে আসামে নিহতের সংখ্যা ১৭ জনে পৌঁছেছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, মেঘালয়ে মারা গেছেন ১৯ জন।

গত দুই দিনে মেঘালয়ের মাওসিনরাম জেলা, চেরাপুঞ্জি শহর ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামের প্রায় ৩ হাজার গ্রাম ও ৪৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব গ্রামের সেতু, বাঁধ ও সড়ক।

চরম ভোগান্তিতে রয়েছে আসামের ২৮ জেলার প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করছে এক লাখ বাসিন্দা। রাজ্যের হোজাই জেলায় বন্যার্তদের বহন করা একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে আজ শনিবার জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই নৌকার ২১ জনকে উদ্ধার করা গেলেও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তিন শিশুর।

বন্যা ও ভূমিধসের কারণে আটকে পড়া লোকজনকে সরিয়ে নিতে গুয়াহাটি ও শিলচরের মধ্যে বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছে আসাম সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে আজ ফোনে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফোনালাপে মোদি রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

মেঘালয়ের মৌসিনরাম ও চেরাপুঞ্জিতে ১৯৪০ সালের পর থেকে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।

বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের সীমান্তসংলগ্ন ত্রিপুরার আগরতলায়ও বন্যার খবর পাওয়া গেছে। মাত্র ছয় ঘণ্টায় শহরটিতে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সরকারি সূত্র বলছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে আগরতলায় তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বন্যার কারণে সেখানে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

অরুণাচল প্রদেশেও সুবর্ণসিড়ি নদীর পানি উপচে তলিয়ে গেছে নির্মাণাধীন একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ।

ওদিকে, গতকাল থেকেই বৃষ্টি নেমেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা সহ দক্ষিণের বেশ কয়েকটি জেলাতে। এদিকে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বর্ষা ঢুকে গিয়েছে ১৭ তারিখ। তবে পশ্চিমের জেলাগুলিতে এখনও বর্ষা ঢোকেনি।

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু পুরো পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের বেশিরভাগ অংশ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের আরও কিছু অংশে আজ অগ্রসর হয়েছে।

আগামী ৩ দিনের মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং পার্বত্য উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বিচ্ছিন্ন ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাত সহ ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।