ই-পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন, ভোগান্তি সাধারণ মানুষের

ই-পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন, ভোগান্তি সাধারণ মানুষের

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
নতুন ডেটা সেন্টার ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের কারণে বন্ধ আছে ই-পাসপোর্টের অনলাইন পোর্টাল। পোর্টালটির সার্ভার ডাউন থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল নাগাদ ই-পাসপোর্টের পোর্টাল চালু হয়ে যাবে।

আজ সোমবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সামনে তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ই-পাসপোর্টের কাজ করতে কেন্দ্রের সামনে লোকজনের ভিড়। তাঁরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। সার্ভার বন্ধ বলে সবাইকে ফেরত যেতে হয়। যাওয়ার সময় কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সমালোচনা করেন।

১৯ বছর বয়সী মাশরাফি রাহীম শেখ রাজধানীর বনশ্রী থেকে এসেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব দ্য পিপলের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, আগামী জুন মাসে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা। পরীক্ষার আগে বিশ্ববিদ্যালয় পাসপোর্ট জমা দিতে বলেছে। মাশরাফি বলেন, ‘পাসপোর্টের সার্ভার ডাউন দেখাচ্ছে। সার্ভার ডাউনের জন্য শিডিউল পেজ ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। আমরা সার্ভারে প্রবেশ করতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে জুন মাসের ২ তারিখের মধ্যে। এত কষ্ট করে এলাম। কোনো কাজ হলো না।’

এর আগে গত ১৫ ও ১৬ মার্চ ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম ঘোষণা দিয়ে বন্ধ ছিল। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অধীনে ডিজাস্টার রিকভারি সাইটে (ডিআরএস) ওএটি এবং ফেইল ওভার টেস্ট সম্পাদনের কারণে ওই দুই দিন সব বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকার ঘোষণা দেয়। কিন্তু ১৭ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যায়নি। পাঁচ দিন পর গত রোববার ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়। কিন্তু এ সেবা কার্যক্রম শুরুর দুই ঘণ্টা পর আবার ডাউন হয়ে যায় সার্ভার। সেদিনও ই-পাসপোর্টের সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢুকে দেখা যায়, ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে ‘এই অনলাইন পোর্টালটি বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে’ লেখা উঠছে। সার্ভারের কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে ই-পাসপোর্টের সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়।

শেওড়াপাড়া থেকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরে এসেছেন ৬৫ বছর বয়সী মো. নাদিমুল ইসলাম। তিনি বেলা দুইটার দিকে এসেছেন। এসে তথ্য ও অনুসন্ধানকেন্দ্র থেকে জানতে পারেন, সার্ভার চালু হয়েছে। তবে মুঠোফোনে তিনি দেখতে পান, ‘সার্ভার ডাউন’।

নাদিমুল বলেন, ‘১৫ মার্চ থেকে সার্ভার বন্ধ। গতকাল ২০ মার্চ আমার কাজটি করার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। গতকাল এসেছি, আজও এসেছি। কাজ হলো না। আমার পাসপোর্ট এমআরপি ছিল, এখন ই-পাসপোর্ট করাব। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাব, হৃদ্‌রোগের জটিলতা আছে। কিন্তু এভাবে কত দিন ঘুরতে হবে কে জানে।’

ই-পাসপোর্ট হচ্ছে একটি অনলাইন বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যেখানে একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ও অ্যানটেনা রয়েছে। এ চিপের মধ্যে বায়োমেট্রিক তথ্য বা পাসপোর্টধারীর পরিচয় সংরক্ষিত থাকে।

২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়। পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছেন প্রায় ৩৩ লাখ লোক। এর মধ্যে ২৬ লাখ ২২ হাজার ৩০০ জন ই-পাসপোর্ট পেয়েছেন।