ইউক্রেন যুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও মানবপাচার বাড়ছে : জাতিসঙ্ঘ

ইউক্রেন যুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও মানবপাচার বাড়ছে : জাতিসঙ্ঘ

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
জাতিসঙ্ঘ সোমবার বলেছে, ইউক্রেনের নারী ও শিশুরা যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ ও পাচারের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। সংস্থাটি এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেছে।

জাতিসঙ্ঘের নারী নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহাউস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এই অভিযোগগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত।

তিনি বলেন, ভাড়াটে সেনাদের ব্যাপক উপস্থিতির সাথে সাথে বিপুল বাস্তুচ্যুতি এবং ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রদর্শিত বর্বরতা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে।

সিমা বাহাউস বলেছেন, মানুষ ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে পালাতে আরো মরিয়া হয়ে ওঠার কারণে মানব পাচারের ঝুঁকিও বাড়ছে। বাহাউস সবেমাত্র মোলদোভার একটি মিশন থেকে ফিরেছেন।

তিনি বলেন, অল্পবয়সী নারী ও সঙ্গীহীন কিশোরীরা একটি বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমি সকল দেশকে পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে আহ্বান জানাচ্ছি এবং পাচার প্রতিরোধে সহযোগিতার জন্য সমস্ত দেশগুলোর প্রশংসা করি, তিনি বলেন।

সিমা বাহাউস মলদোভাসহ অন্য দেশগুলোকে সমর্থন করার জন্য দাতাদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা সীমান্ত পারাপার নিরীক্ষণ করতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে পারে। উল্লেখ্য, দেশগুলো ৪ লাখেরও বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেছে।

ইউক্রেনীয় নাগরিক সমাজের সংগঠন ‘লা স্ট্রাডা’র ইউক্রেনের সভাপতি কাতেরিনা চেরেপাখা পরিষদে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছিলেন। তিনি বলেন, রুশ সেনারা সহিংসতা ও ধর্ষণকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, তার সংগঠনের কাছে প্রায় এক ডজন নারী এবং মেয়ের বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য রয়েছে, যারা রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
 
তিনি বলেন, বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তারা প্রচণ্ড ভয় পেয়েছেন এবং যৌন হামলা সম্পর্কে কথা বলতে বেশ অসুবিধার সম্মুখীনও হচ্ছিলেন।

অস্থির অবস্থায় শিশুরা
রাশিয়া ইউক্রেনে ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের পর থেকে ৪৫ লাখেরও (৪.৫ মিলিয়ন) বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী ও শিশু। আরো ৭১ লাখ (৭.১ মিলিয়ন) মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, ৭৯ লাখেরও (৭ মিলিয়ন) বেশি ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ। এর মধ্যে ৫৭ লাখ (৫.৭ মিলিয়ন) স্কুলের এবং দেড় লাখ (১.৫ মিলিয়ন) ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার।

জাতিসঙ্ঘ সবচেয়ে উদ্বেগজনকভাবে ১৪২ শিশু হত্যার বিষয়টি যাচাই করেছে। আরো ২২৯ জন আহত হয়েছেন।

সম্ভাব্য অপহরণের ঘটনা
ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গি কিসলিয়্যাস বলেছেন, ইউক্রেনে নারী ও শিশুদের সাথে যা ঘটছে তা ভীষণ ভয়াবহ। আমরা যদি ক্রেমলিনকে থামাতে না পারি, তাহলে আরো অনেক শিশু এতিম হয়ে যাবে। আরো অনেক মায়েরা তাদের সন্তান হারাবেন।

তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন থেকে ১ লাখ ২০ হাজার শিশুকে অপহরণের অভিযোগ করেছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে