ঋষি সুনাকের শিকড় কি পাকিস্তানে?

ঋষি সুনাকের শিকড় কি পাকিস্তানে?
ফাইল ছবি

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি হিসবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ঋষি সুনাক। তাকে নিয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্বের শেষ নেই। কিন্তু, ঋষি পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা স্পষ্ট হওয়ার সময় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানি নেটিজেনরা এই ব্রিটিশ রাজনৈতিক নেতার তাদের গর্ব বলে দাবি করতে শুরু করেছে। কিন্তু কেন? সুনাকের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগ কোথায়?

বর্তমানে ৪২ বছর বয়সী ঋষির জন্ম ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে, এক হিন্দু-পাঞ্জাবি পরিবারে। কিন্তু, তার দাদা-দাদি জন্মেছিলেন অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরে। যা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত। ঋষির দাদা রামদাস সুনাক, ১৯৩৫ সালে দাঙ্গার হাত থেকে বাঁচতে কেনিয়ার নাইরোবিতে পাড়ি দিয়েছিলেন। কেরানি হিসেবে কাজ নিয়েছিলেন সেখানে। তার স্ত্রী, সুহাগ রানী সুনাকও প্রথমে দিল্লিতে এসেছিলেন, তারপর ১৯৩৭-এ পাড়ি দিয়েছিলেন কেনিয়ায়।

রামদাস ও সুহাগ রানীর ছয় সন্তান তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ঋষি সুনকের বাবা যশবীর সুনাকের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৯ সালে, নাইরোবিতে। ১৯৬৬ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য তিনি ইংল্যান্ডের লিভারপুলে এসেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যশবীর লিস্টারে ঋষির মা উষার সঙ্গে বিয়ে করেন। এর তিন বছর পর, ১৯৮০ সালে সাউদাম্পটনে জন্মগ্রহণ করেন ঋষি।

এদিকে, ঋষির দাদা রামদাস সুনাক, ১৯৩৫ সালে গুজরানওয়ালা ছেড়েছিলেন, এটা জানার পর থেকেই পাকিস্তানি নেটিজেনরা, ঋষি সুনাক তাদের লোক বলে দাবি করতে শুরু করেছে।

পাকিস্তানের এক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, আমি মনে করি পাকিস্তানেরও ঋষি সুনাকের উপর দাবি করা উচিত। কারণ তাঁর ঠাকুর্দা গুজরানওয়ালার বাসিন্দা ছিলেন। আরেকজন সাফ বলেছেন, বাহ! কী অসাধারণ অর্জন। একজন পাকিস্তানি এখন ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পদে আরোহণ করলেন। আরেকজন বলেছেন, যেহেতু গুজরানওয়ালা পাকিস্তানে, তাই ১০০ বছর আগেও যারা এই শহরের বাসিন্দা ছিল, তারা আজ পাকিস্তানি। কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, এটা ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের জন্যই গর্বের মুহূর্ত।

প্রসঙ্গত, লাহোর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে গুজরানওয়ালা শহরে পৌঁছতে। ভাল খাবার এবং কুস্তি সংস্কৃতির জন্য পরিচিত এই শহর। দেশভাগের আগে, যখন ঋষির দাদা-দাদি এখানে থাকতেন, সেই সময় এই শহরে একটি বৃহৎ ও সমৃদ্ধশালী হিন্দু সম্প্রদায় ছিল। ব্রিটিশ ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে, অনেক হিন্দু, শিখ এবং মুসলমান দেশান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছিলেন। অনেক মুসলিম ও হিন্দু পরিবার আজকের ভারত ও পাকিস্তান ছেড়ে কেনিয়া এবং অন্যান্য দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। আজকের গুজরানওয়ালা, যানজটপূর্ণ, ঘনবসতিপূর্ণ শহর। সরু সরু রাস্তা, কাপড়, গয়না, ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য জিনিসের দোকানে ভরা।

সূত্র: টিভিনাইন