কিডনিতে পাথর হয়েছে বুঝবেন যে ৫ লক্ষণে

কিডনিতে পাথর হয়েছে বুঝবেন যে ৫ লক্ষণে

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
ছোট ছোট স্ফটিক-স্বচ্ছ বস্তুকনা জমাটবদ্ধ হয়ে কিডনি বা মূত্রনালীতে পাথর তৈরি হয়। মূলত শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত খনিজ পদার্থ প্রস্রাবের সঙ্গে দ্রবীভুত বের হয়ে যেতে না পারলে তা কিডনিতে জমা হয়। আর তা থেকেই তৈরি হয় কাঁচের মতো স্ফটিক-স্বচ্ছ বস্তুকণা। আর সেসব বস্তকণা জমাটবদ্ধ হয়েই তৈরি হয় পাথর। এই পাথর মূত্রনালীর ভেতরে ঘুরে বেড়াতে পারে। আর তাতেই যত সমস্যা।

পানি কম খাওয়া বা বাজে খাদ্যাভাস এবং অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থেকেও কিডনিতে পাথর হতে পারে। ছোট ছোট পাথর হলে সাধারণত টের পাওয়া যায় না। তবে কিডনিতে একটি গলফ বলের আকারের সমান বড় পাথরও হতে পারে।

কিডনিতে পাথর হলে ৫টি সাধারণ দেখা দেয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই লক্ষণগুলো...

১. তলপেটে ব্যাথা- তলপেটের এক পাশে বা পেছন দিকে, তলপেঠের উপরের দিকের একপাশে বা পিঠের চারদিকে ব্যাথা কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ।

২. প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যাথা- আপনি যদি প্রস্রাব করার সময় ব্যাথা বা জ্বালাপোড়া অনুভব করেন তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান।

৩. প্রস্রাবের স্বাভাবিক রঙে বদল- প্রস্রাবের রঙ গোলাপী, বাদামী বা লাল হয়ে গেলে তা কিডনিতে পাথর হওয়ার মারাত্মক লক্ষণ।

৪. পাতলা পায়খানা ও বমি- খাদ্যে বিষক্রিয়া বা অন্য কোনো রোগ ছাড়াই বমি বা পাতলা পায়খানা হলে তা কিডিনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ।

৫. জ্বর- হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হওয়া।

সাধারণত, পাথরগুলো যতক্ষণ কিডনিতে ঘোরাফেরা করে বা মূত্রনালীতে যায় ততক্ষণ কোনো লক্ষণ টের পাওয়া যায় না। ছোট পাথর সামান্য বা কোন ব্যথা ছাড়াই প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়েও যেতে পারে। বড় পাথরগুলো মূত্রাশয়ে আটকে যেতে পারে এবং হঠাৎ করেই তীব্র ব্যথার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। সাধারণত পেটে বা পিঠের একপাশে এই ব্যাথা হঠাৎ করেই তৈরি হয়ে আবার দ্রুত চলেও যেতে পারে।

অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে, অস্বাভাবিক প্রস্রাবের রঙ, প্রস্রাবে রক্ত, জ্বর, ঠান্ডা লাগা, বমি বমি ভাব এবং বমি। কখনও কখনও একটি পাথর এতোটা বড় হয়ে যেতে পারে যে তা প্রস্রাবেও বাধা তৈরি করতে পারে। এর ফলে প্রস্রাব জমে একটি বা উভয় কিডনিই ফুলে যেতে পারে এবং পাশে বা পিছনে ব্যথা হতে পারে। অবিলম্বে চিকিৎসা না নিলে এর ফলে কিডনির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে।

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের কিডনিতে পাথর হয়। তবে শিশু এবং কিশোরদেরও কিডনিতে পাথর হতে পারে। স্থূলতা, মূত্রনালীর অস্বাভাবিক গঠন, বাজে খাদ্যাভ্যাস, বিপাকীয় রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণেও কিডনিতে পাথর হয়। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে অত্যাধিক লবণ খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করা।

পর্যাপ্ত তরল পান না করা কিডনিতে পাথর হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। তবে খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা এবং শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণেও কিডনিতে পাথর হতে পারে।

তুলসী, সেলারি, আপেল, আঙ্গুরের মতো খাবার কিডনিতে পাথর হওয়া ঠেকাতে সহায়ক। কিডনিতে পাথর, প্রস্রাবের সংক্রমণ, বা কিডনি সংক্রমণের কোনো লক্ষণ দেখামাত্রই অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।