ক্যাম্পাসে পুলিশ যুদ্ধসাজে ঢুকবেই কেন : জাফর ইকবাল

ক্যাম্পাসে পুলিশ যুদ্ধসাজে ঢুকবেই কেন : জাফর ইকবাল

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলাকে অত্যন্ত নৃশংস দাবি করে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘পুলিশ কেন নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাবে? ক্যাম্পাসে পুলিশ যুদ্ধসাজে ঢুকবেই কেন? শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার সময় শিক্ষকদের নীরব ভূমিকারও সমালোচনা করেন তিনি।

‘আমি যতটা চিন্তা করেছিলাম অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। তাদের শরীরে স্যালাইনও পুশ করা যাচ্ছে না। বেশির ভাগই বসতে পারছে না। যে মানুষ এই অবস্থা দেখার পরও নিজের জায়গায় অনড় থাকে, তাকে আমি মানুষ বলতে চাই না। আমি তাকে দানব বলি।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর পর এসব কথা বলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বুধবার সকালে উপাচার্য ভবনের সামনে পানি খাইয়ে ২৮ শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক।

এর আগে ভোর ৪টায় ক্যাম্পাসে এসে তিনি অনশন ভাঙতে শিক্ষার্থীদের রাজি করান। অনশন ভাঙার পর শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলেন এই শিক্ষাবিদ।

এরপর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রাণ অনেক মূল্যবান। এ রকম একজন মানুষের জন্য তাদের প্রাণ নষ্ট হতে পারে না। এটা আমি অনশনকারীদের বুঝিয়েছি। তারা সেটা বুঝেছে। এ জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আজ আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন।’

তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করেছি, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে যতগুলো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সবগুলো অমানবিক, নিষ্ঠুর ও দানবীয়।

‘আমি ধরেই নিয়েছিলাম এখানে একটি মেডিক্যাল টিম থাকবে। কিন্তু এখানে কোনো মেডিক্যাল টিম নেই। শুধু তাই নয়, যারা তাদের টাকাপয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেছিল, তাদের গ্রেপ্তার করে মামলা দেয়া হয়েছে। এর চেয়ে নিন্দনীয় আর কিছু নেই। আমি আশা করব, এই বিষয়গুলো যেন অবশ‌্যই বন্ধ হয়। আমাদের ছেলেমেয়েদের যেন মুক্ত করে দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আসার আগে সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। আমি আশা করি, তারা আমাকে যে কথা দিয়েছেন সে কথাগুলো রাখবেন। যদি তারা তা না রাখেন তবে কেবল আমার সঙ্গে নয়, এ দেশের প্রতিটি প্রগতিশীল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।’

এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যে সুন্দর আন্দোলন করেছে তা দেশের কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারবে না। এই আন্দোলনে দেশের সব তরুণ-তরুণী হৃদয় থেকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের আন্দোলন থেকে কাউকে ফায়দা নেয়ার সুযোগ দেয়নি। নিজেরাই সহযোদ্ধাদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে, খাবার রান্না করেছে। সব তারা করেছে। এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য খুব কমই আছে।’