খেলোয়াড়দের জয়ের মনোভাব নিয়ে মাঠে নামতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

খেলোয়াড়দের জয়ের মনোভাব নিয়ে মাঠে নামতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য অর্জনের জন্য আমাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আরো প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে খেলোয়াড়দেরও জয়লাভের মনোভাব নিয়ে মাঠে নামতে হবে। আমরা বিজয়ী জাতি। জাতির পিতার আহ্বানে অস্ত্র তুলে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে- যুদ্ধে জয় করেছি খেলায়ও জয়ী হবো। এ মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকলেই সাফল্য আসবে।
বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি যতবেশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা, সাহিত্য চর্চা করবে। তত বেশি তাদের মধ্যে সুস্থ মানসিকতা ও দেশপ্রেম গড়ে উঠবে। যুবকদের যোগ্য নাগরিক হতে সাহায্য করবে।

তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া সেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন ২০১১’ প্রণয়ন করে একটা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনকে করোনাকালীন ৩০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। মোট ৪০ কোটি টাকার সিড মানি দেওয়া হয়েছে। আমি আরো ২০ কোটি টাকা দেব। আমাদের খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্তরা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন অথবা তাদের নানা অসুবিধা দেখা দেয়। বয়স হয়ে গেলে বাড়িতে তাদের কিছু করার থাকে না। এ ফাউন্ডেশন থেকে সমস্যাগ্রস্ত খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা অন্যান্য ক্ষেত্রের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নেও সমান গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালেই জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন এবং ১৬টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন অনুমোদন করেন। ১৯৭৪ সালে আরো ১৮টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন এবং বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুমোদন দেন। ১৯৭৪ সালে ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট’ পাস করে আজকের ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ’ গঠন করেন। ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী ও সংস্কৃতিসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ অনুমোদন দেন।

সরকার প্রধান বলেন, গত ১৪ বছর ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সফলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৪৮৫টি স্বর্ণ, ৪৯৯টি রৌপ্য, ৫৯৫টি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছে। ১১৪ বার চ্যাম্পিয়ন, ২৬ বার রানার্সআপ ও ২২ বার তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি এবং প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। প্রথম পর্যায়ে ১২৫টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে দেশের অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উন্নয়ন কাজ চলমান। এরই মধ্যে কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের উন্নয়ন, ১৩টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ, সারাদেশে ৫৬টি স্টেডিয়াম, ৮টি সুইমিংপুল, ৬টি সুটিং রেঞ্জ, ৭টি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ২৩ জন খেলোয়াড়ের হাতে পাঁচ লাখ টাকা করে এবং ১১ জন প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তার হাতে দুই লাখ টাকা করে চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে খেলোয়াড়রা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এর ট্রফি তুলে দেন এবং ফটোসেশনে অংশ নেন।