গ্যাসে ভাসছে দ্বীপজেলা ভোলা

গ্যাসে ভাসছে দ্বীপজেলা ভোলা

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
গ্যাসে ভাসছে দ্বীপজেলা ভোলা। এবার এ জেলাটিতে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাপেক্স। ভোলার বোরহানউদ্দিনের টবগী-১ নামের একটি কূপ খননের পর সেখানে পরীক্ষা করে নতুন করে আরো গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে একের পর এক গ্যাসের সন্ধান মেলায় নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার খুলছে দ্বীপজেলা ভোলায়। এতে জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি গ্যাসভিত্তিক নতুন শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠলে শিক্ষিত বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে গৃহস্থলী কাজে গ্যাস ব্যবহারের দাবিও তুলেছেন ভোলাবাসী।

সূত্র জানিয়েছে, ২৭ বছর আগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া গ্রামে প্রথমবারের মতো শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়। এরপর সেখানে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি কূপ খনন করে বাপেক্স। ওইসব কূপে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স। পরবর্তীকালে ২০১৮ সালের দিকে এ জেলায় আরো গ্যাসের সন্ধান রয়েছে কিনা সেটি যাচাই করতে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করে টবগী-১, ভোলা নর্থ-১ ও ইলিশা-১ নামে আরো তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স।

বাপেক্স কর্তৃক রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে এ বছরের ১৯ আগস্ট টবগী-১ নামের একটি কূপ খনন শুরু করে। গত ১২ অক্টোবর খনন কাজ শেষ হওয়ার পর মাটির সাড়ে ৩ হাজার গভীরে সম্ভাব্য গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন গ্যাস রয়েছে বলে ধারণা করছেন বাপেক্স কর্মকর্তারা। ওই গ্যাস আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা। খুব শিগগির ওই কূপ থেকে গ্যাসের উত্তোলন শুরু করবে বাপেক্স।

এদিকে নতুন করে আরো গ্যাসের সন্ধান মেলায় সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে ভোলায়। এ গ্যাস ব্যাবহারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ভোলাবাসী।

স্থানীয় শিক্ষিত যুবক হাসনাইন, মহিন ও তুহিন বলেন, নতুন করে আবার গ্যাসের সন্ধান মিলেছে, এটা ভোলাবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আমরা চাই, ভোলায় যেন গ্যাসভিত্তিক আরো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।

এলাকাবাসী জানান, একের পর এক গ্যাসের সন্ধান মিলছে যা ভোলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, একইসাথে ভোলার মানুষ যাতে গৃহস্থলীর কাজে সেই গ্যাস ব্যবহার করতে পারেন সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হোক।

এদিকে বাপেক্স জানিয়েছে, এ বছরের নভেম্বর থেকে আগামি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে বাকি দুটি কূপের খননকাজ শেষ হবে। শুধু তাই নয়, জেলায় আরো গ্যাসের সন্ধান পেতে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপও চালিয়ে যাবেন তারা। যদি গ্যাসের সন্ধান মেলে তাহলে আরো কূপ খননের কাজ শুরু করবেন। তবে ভোলাতে আরো গ্যাসের সন্ধান মিলবে সেটা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে।

বাপেক্সের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের পাঁচটি কূপে বর্তমানে ১.৩ টিসিএফ ঘনফুট গ্যাসের মজুদ হচ্ছে। যা থেকে প্রতিদিন ৬৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। আগামীতে আরো ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন গ্যাস উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।