জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই : দানবীর ড. রাগীব আলী

জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই : দানবীর ড. রাগীব আলী

রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ফুলেল শুভেচ্ছা


রয়েল ভিউ ডেস্ক:

সিলেটের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান পদে ফের মনোনীত হওয়ায় ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর ড. রাগীব আলী। তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত ওই স্বনামধন্য স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ বছর পর স্বপদে ফিরেছেন তিনি।

মঙ্গলবার আর্তমানবতার কল্যাণে নিবেদিত রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন অধিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ দানবীর ড. রাগীব আলীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। জবাবে দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, যত বাধা বিপত্তিই আসুক; আর্ত-পীড়িত মানুষের সেবায় আমার কার্যক্রম বন্ধ হবে না। মানুষের ভালোবাসা আমাকে অনুপ্রেরণা যোগায়। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত সেই মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।
রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আয়োজনে দানবীর ড. রাগীব আলী আরো বলেন, রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। এর সাথে মিশে আছে বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর স্মৃতি। আছে সহায়-সম্বলহীন ও নিরন্ন মানুষের হৃদয় নিংড়ানো দোয়া। আমার বিশ্বাস ছিলো, সেই প্রতিষ্ঠান ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করে কেউ সফল হবে না। বৃদ্ধ বয়সে জেলে পাঠিয়ে সাময়িক কষ্ট দিয়েছে, তবে তারা সফল হবে না। ভালো কাজ দেখলে যাদের গাত্রদাহ হয়, তারাই এই প্রতিষ্ঠানের অনিষ্ট চাইবে। আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুক।
ষড়যন্ত্রকারীদের রোষানলে পড়ে জমি-জমা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর নিজের প্রতিষ্ঠিত জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ থেকে কাগজেপত্রে দূরে রাখা হয় সিলেট অঞ্চল তথা দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য শিক্ষা ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান এর প্রতিষ্ঠাতা দানবীর ড. রাগীব আলীকে। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাকে পুনরায় গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করেছে। এর প্রেক্ষিতে দানবীর ড. রাগীব আলী প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহে বিরাজ করছে আনন্দ। এর অংশ হিসেবে গতকাল ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন অধিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সিলেটের ডাক-এর নির্বাহী সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের, রাগীবনগর রাগীব-রাবেয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহিদ, হবিগঞ্জের পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো: এনামুল হক, রাগীবনগর রাগীব-রাবেয়া ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ অর্ধেন্দু কুমার দাশ, লামাকাজী রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ এ কে এম ছিফত আলী, রাগীবনগর রাবেয়া বানু জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সিদ্দিকুর রহমান শাহীন, দোয়ারাবাজার নরসিংপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হক নমু, হাজী রাশীদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্বাছ আলী, রাগীব-রাবেয়া স্পোর্টস একাডেমির পরিচালক জমিরুল হক তালুকদার, শাহজালাল রাগীব-রাবেয়া প্রতিবন্ধী ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হেপী রানী দে, রাবেয়া খাতুন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের রাশিদা হামিদ, বিশ্বনাথের দন্ডপানিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ফয়জুল ইসলাম, রাগীব-রাবেয়া জামিয়া ইসলামিয়া সিদাইরগুল মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মাযহারুল ইসলাম আযাদী, জামেয়া ইসলামিয়া রাগীবিয়া গোয়াবাড়ি মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আতিকুর রহমান, দৈনিক সিলেটের ডাক এর সিনিয়র সাব এডিটর আব্দুস সবুর মাখন, চিফ রিপোর্টার মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, চিফ ফটো জার্নালিস্ট আব্দুল বাতিন ফয়সল, সিনিয়র রিপোর্টার কাউসার চৌধুরী, আনাস হাবিব কলিন্স, নূর আহমদ, এনামুল হক রেনু, ফায়যুর রহমান প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে দৈনিক সিলেটের ডাক এর নির্বাহী সম্পাদক আবদুল হামিদ মানিক বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে সাময়িক সরিয়ে দেয়া হয়েছিলো, আজ তিনি স্বপদে ফিরেছেন। এটা তার পাওনা ছিলো। এখন সবার উচিত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা, এই হিতৈষী ব্যক্তিকে আল্লাহ দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখুন।’
দৈনিক সিলেটের ডাক-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ বলেন, সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। দানবীর ড. রাগীব আলীর মেডিকেল কলেজে প্রত্যাবর্তন সত্যের জয় হয়েছে।
দৈনিক সিলেটের ডাক এর প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের বলেন, সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে দানবীর ড. রাগীব আলীর রয়েছে অসামান্য অবদান। এই অবদান জাতি আজীবন স্মরণ রাখবে।
দোয়ারাবাজারের নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক নমু বলেন, ‘সুনামগঞ্জের মানুষের ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে উন্নত চিকিৎসাগ্রহণের সুযোগ ছিলো সীমিত। রাগীব-রাবেয়া মেডিকেলই একমাত্র ভরসা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মেডিকেল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা এই সমাজের শত্রু। ষড়যন্ত্রীরা দানবীর ড. রাগীব আলীকে কারাগারে পাঠিয়ে সমাজের গরিব মানুষের সেবার পথ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলো।
লামাকাজী রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ এ কে এম ছিফত আলী বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলীর অবর্তমানে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেলে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে নানাজন নানা কথা বলতো, এবার নতুন উদ্যমে চলবে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম।
রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের সচিব মেজর (অব:) শায়খুল হক চৌধুরী বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলী একসময় কারান্তরীণ থাকলেও তার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা ও পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো। তবে শারীরিক কারণে অনেক সময় এসব প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া যাচ্ছে না। শিগগিরই পুনরায় দানবীর ড. রাগীব আলী প্রতিষ্ঠানসমূহে পরিদর্শন শুরু করবেন বলে জানান তিনি।