ঢাবি’র ছাত্রী হলের অভ্যন্তরে সালোয়ারের উপর গেঞ্জি পরিধান নিষিদ্ধ

ঢাবি’র ছাত্রী হলের অভ্যন্তরে সালোয়ারের উপর গেঞ্জি পরিধান নিষিদ্ধ

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
হলের অভ্যন্তরে সালোয়ারের উপর গেঞ্জি পরিধান করাকে অশালীন পোশাক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ। হল কর্তৃপক্ষের কারো স্বাক্ষরহীন জারি করা একটি নোটিশে লেখা হয়েছে, হলের অভ্যন্তরে 'অশালীন পোশাক' কখনোই পরিধান করা যাবে না। আর পরিধান করলে 'কঠোর শাস্তি' দেয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। 

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলের অভ্যন্তরে মেয়েরা একটু খোলামেলা থাকতেই পছন্দ করেন। তাই তারা এরকম পোশাক পরিধান করেন। কিন্তু এর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।

হল কর্মচারীরা বলেন, ছাত্রীদের হলের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী পুরুষ। এরকম পোশাক পরিধানের ফলে তাদের লজ্জায় পড়তে হয়। 

ছাত্রীরা বলছেন, আমদেরলে এখন হলের মাঝেও পরাধীন করা হচ্ছে। আমরা কি বুঝিনা, শালীনতা কি? হল প্রশাসনের এটি একটি পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা ভাবনা যদিও এটা মেয়েদের হল। এ পোশাকে যদি কোন কর্মচারী-কর্মকর্তার সমস্যা হয় তাহলে তাদের ছাত্র হলে হলে স্থানান্তর করা হউক। আর হলের সকল পদে নারীদের নিয়োগ দেয়া হউক। এতে নারীদের কর্মসংস্থানও হব, আমাদের স্বাধীনতাও থাকবে।

এদিকে এ নোটিশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তর্ক বিতর্ক। কেউ বলছেন সঠিক সিদ্ধান্ত কেউবা বলছেন ভুল।

তবে অনেক ছাত্রীরা বলছেন, এটা যেহেতু মুসলিম প্রধান দেশ। হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীও মুসলিম। ইসলাম কখনো কোথাও খোলামেলা পোশাক পছন্দ করেনা। তাই আমাদের উচিত এ নোটিশ মেনে চলা। আর এরকম পোশাক পরিধানকারীর সংখ্যাও কম। তাদের এরকম পোশাক আমাদেরও লজ্জায় ফেলে।  

আবার অনেকে বলছেন, শুধু ধর্মই নয়, শালীনতার নীতিতিতেও এরকম পোশাক পরা উচিত না। 

এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অনেক শিক্ষার্থী । 

নাজমুন তৃষা নামে এক ছাত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেটা কিনা মুক্তবুদ্ধির চর্চার সেরা জায়গা সেখানে ভালই তামশা হচ্ছে!! আমি কি ড্রেস পড়ব তা তো আমার ব্যাপার। আপনি বলার কে?? আর আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে অশিক্ষিতের মত নিজের চরকায় তেল না দিয়ে মেয়েদের গেঞ্জি প্যান্ট নিয়ে টানাটানি করেন কি হিসেবে!''

তিনি আরো লিখেছেন, ''কবি সুফিয়া কামাল হলের ক্যান্টিন একটা তো বন্ধই করে রাখছে, মেয়েদের খাবারের জন্য কি ঝামেলা নিতে হয় জানা আছে ম্যঠামের? অন্য হলের চাইতে দ্বিগুম তিনগুন টাকা দিয়েও মেয়েরা ভাল খাবার পায় না। রান্নাঘর টয়লেটের অবস্থা যাচ্ছে তাই, বাইরে দিয়া ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট বানায়া রেখে এখন আসছে শালীনতা নিয়ে মাথা ঘামাইতে। শালীনতা কাকে বলে এটা নতুন করে জানতে হবে তাহলে। একটা ওয়ার্কশপ দিয়া দেক তাইলে "শালীনতা আন্ডার মাই বুরখা" 

প্রসঙ্গত ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের কাছে প্রায় সাত একর জায়গার ওপর এ হলের যাত্রা শুরু হয়। আবাসিক ছাত্রীরা হলে ঢোকেন ২০১৩ সালে। বর্তমানে হলের আবাসিক ছাত্রীসংখ্যা দুই হাজার এবং অনাবাসিক ছাত্রীসংখ্যা ৩ হাজার ৩০০। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলটি উদ্বোধন করেছিলেন। আর নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর সমতা প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন কাজ করা কবি সুফিয়া কামালের নামে হলটির নামকরণ করা হয়েছে।