দুই বছর পর প্রাণ ফিরছে রমনা বটমূলে

দুই বছর পর প্রাণ ফিরছে রমনা বটমূলে

ডেস্ক রিপোর্ট:
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই বছরের প্রাণহীন পহেলা বৈশাখ পেরিয়ে এবছর সারা দেশে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালির প্রিয় সার্বজনীন অনুষ্ঠান বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদযাপন করা হবে। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে সব ধরনের আয়োজন থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

এ বছর পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান যেমন থাকবে, তেমনি চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাও বের হবে। এ ছাড়া সারা দেশে বৈশাখী মেলা এবং শোভাযাত্রার আয়োজনও থাকবে। জেলা এবং উপজেলায় থাকবে কুইজ প্রতিযোগিতা, নববর্ষের সাজ এবং লোকজ মেলা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, বুধবার ছায়ানটকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রমনার বটমূলেই এবারের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা জানান, “দুই বছর পর আমরা এটি করতে পারছি বলে খুবই আনন্দিত। অনুষ্ঠানের সময়টাও সামান্য একটু কমে আসবে। তাছাড়া সকলেরই প্রবল উৎসাহ আছে। অনেকদিন পর এমন আনন্দ-আয়োজনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি।”

তিনি বলেন, অনুমতির পরে আর কোনো বাধা নেই। তারা এরিমধ্যে মহড়া শুরু করে দিয়েছেন। প্রতিবার ১২৫ জনের মতো শিল্পী এ আয়োজনে অংশ নেন। এবার স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি বিবেচনা করে শিল্পীর সংখ্যা অল্প কয়েকজন কমিয়ে আনা হবে।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চারুকলা বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে সেখানে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। জয়নুল গ্যালারির সামনে একদল শিক্ষার্থী মাটির সরায় মাছ, পাখি, ফুলসহ নানা চিত্র এঁকে চলেছে। আরেকদল নানা ধরনের মুখোশ তৈরি করছে। কিছু শিক্ষার্থী হাতপাখা, চরকিসহ নানান জিনিস বানাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে/ মাহমুদ হোসেন অপু/ঢাকা ট্রিবিউন

শিক্ষার্থীরা জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিফ থাকবে। ভেতরে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় কয়েকজন শ্রমিক মোটিফগুলোর কাঠামো তৈরি করছেন।

রজনীকান্ত সেনের গান “নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে” এবারে চারুকলার বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, “মঙ্গল শোভাযাত্রা ফিরে এলেও তারা স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারটা বিবেচনায় রেখেছেন। এবার শোভাযাত্রায় মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্বের ওপর জোর দেওয়া হবে।”

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানান, তারা বর্ষবরণ ঘিরে আয়োজিত সকল আয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পক্ষে পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ নাসরিন ইলা জানান এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলার নববর্ষের আয়োজন থাকছে না। এছাড়া ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানও এ বছর থাকবে না।