দু’দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি কামাল হত্যাকান্ডের

দু’দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি কামাল হত্যাকান্ডের
ফাইল ছবি

রয়েল ভিউ ডেস্ক: 
সিলেটে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকান্ডের দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কামাল হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন আজিজুর রহমান সম্রাটকে আটকের গুঞ্জন শোনা যায়। তবে আইনশৃঙ্খরা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন ইউনিটই তার সত্যতা স্বীকার করেনি।

এদিকে, কামাল হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায়ও এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, কামাল হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। আমরা এজাহারের জন্য অপেক্ষায় আছি। পরিবার থেকে মামলা দায়ের করা না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

গত রোববার রাত ৯ টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা বড়বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নেতা আ ফ ম কামাল।

ব্যবসায়ীক বিরোধে কামাল খুন হতে পারেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রথমে এই হত্যাকান্ডের সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।

এখনও মামলা দায়ের না করা প্রসঙ্গে আ ফ ম কামালের বড়ভাই ময়নুল হকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল সিলেট বিমানবন্দর এলাকা থেকে আম্বরখানা বড়বাজার হয়ে গোয়াইটুলার দিকে যাচ্ছিলেন। তার গাড়িকে অনুসরণ করছিল দুটি মোটরসাইকেল। বড়বাজার ১১৮নং বাসার সামনে কামালের গাড়ির গতিরোধ করে বাইক আরোহীরা। পরে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই কামাল মারা যান জানিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামছুল ইসলাম বেলন, কামালের দেহে ২৫টি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার বাঁ হাতে ১৬টি, বাম বগলের নিচে ২টি, বুকের বামপাশে ১টি ও বাম পায়ে ৬টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আ ফ কামাল খুনের ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয় পাঁচজন। এরমেধ্য আজিজুর রহমান সম্রাট, শাকিল ও রাজু নামের তিনজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে এই সূত্র। এদের মধ্যে সম্রাট আগে ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন তবে বর্তমানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানা গেছে।

মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আ ফ ম কামাল রাজনীতির পাশাপাশি পাথর ব্যবসা এবং নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি তার ট্রাভেল এজেন্সি থেকে আজিজুর রহমান সম্রাটের আত্মীয়কে সৌদি আরবে পাঠানো নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সম্রাট গত ২১ অক্টোবর আ ফ ম কামালসহ ১০ জনের নামোল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এরই জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।