আশ্রিতদের দুর্ভোগ 

দোয়ারাবাজারে পানিতে ভাসছে  আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর 

দোয়ারাবাজারে পানিতে ভাসছে  আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর 

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা॥ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে  মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ ত্রুটির কারণে একটুখানি বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে অঝোরে পানি পড়ে ভেসে যায় ঘরের মেঝে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদীভাঙনে উপজেলা সদরের মাছিমপুর গ্রামের বসতভিটা হারানো আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর ১৪টি ঘরের নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট, রড ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অধীনে ১৪টি ঘরের নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট ও অপেক্ষাকৃত কম সিমেন্ট। নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করায় একটু বৃষ্টিপাতেই টিনের চালা চুপসে পানি পড়ে। পলিথিন আর বস্তা দিয়েও বন্ধ হচ্ছেনা পানিপড়া।


প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউএনও এবং সদস্যসচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ছাড়াও রয়েছেন কয়েকজন সদস্য। অথচ পিআইও একাই পুরো প্রকল্পের সবকিছু পরিচালনা করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

উপজেলা সদরের পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামে উপহারের ঘর পাওয়া শেফালী রানী দাস, সুকেশ দাস, ভূষণ দাস, সুমিতা রানী দাস, বাবুল দাস বলেন, প্রথম থেকেই ঘরের মেঝের পিচ-ঢালাই উঠে যাচ্ছে। দিনে যেমন-তেমন, রাতে একটুখানি বৃষ্টি হলেই অঝোর ধারায় পানি পড়ায় আমরা বিনিদ্র রাত কাটাই।

ঝর্ণা রানী দাস বলেন, সুরমার ভাঙনে বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেলে প্রধানমন্ত্রী  আমাদের ঘর উপহার দিয়েছেন। কিন্তু বৃষ্টি হলেই চালার পানি পড়ে মেঝে ভেসে যায়।  ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঠে দুর্ভোগ পড়েছি। নিরঞ্জন দাস বলেন, আমাদের এখানে আসা-যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এতে আমাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। 

রাজেন্দ্র দাস বলেন, মঙ্গলবার ইউএনও স্যার আমাদেরকে অফিসে ডেকে এনে বলেন, খোঁজখবর নিয়ে মিস্ত্রি পাঠিয়ে পানি পড়া বন্ধ করতে ১৪টি ঘরে কাজ করিয়েছেন। 

বাশির আহমদ বলেন, উপজেলার বাঁশতলা-হকনগরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলোর অবস্থাও একই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার  ত্রুটিপূর্ণ কাজে সরকার আজ প্রশ্নবিদ্ধ। 

ত্রুটিপূর্ণ কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আম্বিয়া আহমদ বলেন,  এ বিষয়ে সরাসরি কথা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, ঘরের চালা চুপসে পানি পড়ার বিষয়ে ১৪টি ঘরের লোকজন গত মঙ্গলবার আমার দফতরে এসেছিলেন। তবে পানিপড়া রোধে তারা নিজেরাই কাজ করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।