নগরীতে ছিনতাইরোধে পুলিশের অভিযান, আটক ৮
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীতে ছিনতাইরোধে অভিযানে নেমেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবারসহ তিনদিনের অভিযানে আটক হয়েছে ৮ ছিনতাইকারী। আটককৃতদের মাঝে সিএনজি অটোরিক্সা ও মোবাইল ছিনতাইকারী রয়েছে। কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, নগরীতে অভিনব কায়দায় সিএনজি অটোরিক্সা ছিনতাই করছে একটি চক্র। এ জন্য ছিনতাইকারীরা অটোরিক্সা চালকের সঙ্গে যোগসাজশ করে যাত্রীবেশে অবস্থান করে। এরপর ওই অটোরিক্সায় সাধারণ যাত্রী উঠলে তাঁর সর্বস্ব লুটে নেওয়া হয়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযানে নামে।
এ অভিযানে গত মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনে ছিনতাইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচজনকে আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছে জেলা পুলিশের বরখাস্ত কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল রোমান (২৬), মৌলভীবাজারের সাব্বির হোসেন (২৩), সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারের শাহাজাহান আহমদ (২৬), দক্ষিণ সুরমার দুলাল মিয়া (২৪) ও মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের রাসেল আহমদ। এর মধ্যে শাহাজাহান আহমদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ছিনতাইয়ের অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, দুলাল আহমদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে আবদুল্লাহ আল রোমান ও সাব্বির হোসেনকে আটক করা হয়। অন্য তিনজনকে গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বন্দরবাজার এলাকা থেকে অটোরিক্সাসহ আটক করে পুলিশ।
পুলিশ আরো জানায়, সম্প্রতি নগরীতে যাত্রীবেশে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মৌখিক অভিযোগ আসে কোতয়ালী থানায়। এর মধ্যে এক ব্যক্তি এক লাখ টাকা ও আরেকজন ৬৫ হাজার টাকা খোয়ানোর মৌখিক অভিযোগ করেন। তবে, ভুক্তভোগিরা লিখিত অভিযোগ দিতে নারাজ ছিলেন। এসব বিষয় সামনে রেখে কোতয়ালী থানা-পুলিশ তদন্তে নামে।
পরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা দেখে একটি অটোরিক্সা চিহ্নিত করে পুলিশ। ওই অটোরিক্সার নম্বরপ্লেট দেখে সন্ধান চালিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় শাহাজাহানসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় র্যাবের করা ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় তাদের আটক দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার নগরীর ওসমানী মেডিকেল কলেজের ভেতরে একটি অটোরিক্সায় মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা সালেহ আহমদ (২৬) নামের এক যুবককে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সাবেক পুলিশ সদস্যসহ দুজনকে আটক করা হয়। পরে মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় আটক দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মো. নজমুল হুদা বলেন, ছিনতাইয়ের শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই মামলা করতে চান না। এতে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তিনি আরও জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার আটককৃত পাঁচজনকে আদালতে নিয়ে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত আগামী রোববার রিমান্ড আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য্য করেছেন। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।
এসআই মো. নজমুল হুদা আরো জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় মোবাইল ছিনতাইকালে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে রুবেল আহমদ (২৮), আলী নূর (২৪) ও পাভেল (১৮)।
