প্রয়োজন বিত্তবানদের আর্থিক সহায়তা: বোনম্যারু ট্রান্সপ্লান্টে বেঁচে থাকবে তানিয়া সুলতানা

প্রয়োজন বিত্তবানদের আর্থিক সহায়তা: বোনম্যারু ট্রান্সপ্লান্টে বেঁচে থাকবে তানিয়া সুলতানা

কাউসার চৌধুরী
তানিয়া সুলতানা মা-বাবার প্রথম সন্তান। প্রাথমিক আর মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়। কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করবে। দাঁড়াবে মাথা উঁচু করে। তানিয়া যখন এমন স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল; ঠিক তখনই তার সামনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। তার বোন ম্যারোতে সমস্যা দেখা দেয়। এখন পড়াশোনা করা দূরে থাক; তানিয়া এখন বেঁচে থাকা তার কাছে অনেকটা দায়। কথা ছিল এ বছর দিরাই উপজেলার বিবিয়ানা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তানিয়া সুলতানা।

তানিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে তানিয়ার শরীরে নানান সমস্যা দেখা দেয়।স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসাও করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। কয়েক মাস ধরে চিকিৎসা গ্রহণের পরও কোনো রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। হয়নি শারীরিক কোনো উন্নতি। এর ফলে তার মা-বাবা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে গেল ২৮ মে তাকে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওসমানী হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ টানা ১১ দিন ধরে তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এক সময় তার শরীরের বোনম্যারুতে জটিল সমস্যা ধরা পড়ে। চিকিৎসকগণ দ্রুত বোনম্যারু ট্রান্সপ্লান্ট করার পরামর্শ ও মেডিসিন দিয়ে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেন। এরপর থেকেই দরিদ্র পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ দূরে থাক; এখন বেঁচে থাকার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি মেধাবী ছাত্রী তানিয়া সুলতানা।
 
তানিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের উত্তরসুরিয়ারপাড় গ্রামে। তার পিতার নাম মো. আবুল হাশিম ও মাতা মোছা. হাফছা বেগম। হাশিম-হাফছা দম্পতির প্রথম সন্তান তানিয়া। মেয়েকে মা-বাবারও স্বপ্নের কোনো কমতি ছিল না।

জানা গেছে,তানিয়ার আরও তিন ভাই ও এক বোন রয়েছে। অসুস্থ হওয়ার পর বাবা মো. আব্দুল হাশিমের ছোট্ট কাপড়ের দোকানের পুঁজি মেয়ের চিকিৎসায় ব্যয় করেন। এরপর বিক্রি করে দেন নিজের সহায়-সম্বল জমিটুকুও। চেয়েছিলেন সবকিছুর বিনিময়ে মেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু না বোনম্যারুতে জটিল সমস্যা ধরার পর তাদের সবকিছু থমকে গেছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বোনম্যারু ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এতে অন্তত ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা লাগবে। বোনম্যরু ট্রান্সপ্লান্ট করা গেলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে মেধাবী তানিয়া। ফিরে আসবে স্বাভাবিক জীবনে -কলেজের ক্যাম্পাসে। পূরণ করবে মা-বাবার স্বপ্ন।

তানিয়ার বাবা মো.আব্দুল হাশিম সিলেটের ডাককে বলেন, মেয়ের চিকিৎসার জন্যে কত জায়গায় গিয়েছি। কিন্তু টাকার কোন সংস্থান এখনো হচ্ছে না। বিত্তশালী মানবতাবাদী লোকজন আমার মেয়ের জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসলে আমি তাদের নিকট চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

এদিকে,তানিয়ার সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব যে যার মতো আর্থিক সহযোগিতার চেষ্টা করছেন। যাচ্ছেন মানুষের দ্বারে-দ্বারে। তানিয়া সুলতানাকে সুস্থ করে তুলতে -বাঁচিয়ে রাখতে তাদের প্রচেষ্টার কোনো শেষ নেই।

পুণ্যভূমি সিলেটে মানবতাবাদী-বিত্তশালী লোকজনের আর্থিক সহায়তায় সাংবাদিক, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চিকিৎসা করে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। এবারও মেধাবী ছাত্রী তানিয়া সুলতানার চিকিৎসার জন্যে সেই সব মানবতাবাদী লোকজন তার পাশে দাঁড়াবেন-এমন প্রত্যাশা তানিয়ার পরিবারের।

তানিয়ার চিকিৎসার জন্যে যে কেউ সহযোগিতা করতে পারবেন। নিম্নোক্ত ব্যাংক হিসাবে আর্থিক সহায়তা পাঠানো যাবে। হিসাব নং- ২৪৪৬১০১০৮০৩৬৪,পুবালী ব্যাংক লি.,মহিলা কলেজ শাখা, চৌহাট্টা, সিলেট। এছাড়াও নিম্নোক্ত বিকাশ ও নগদ একাউন্টে (০১৭৩৫৮৯০২৮২) ও বিকাশ একাউন্টে (০১৭৩৮৭৮১৪৯২) আর্থিক সহায়তা করা যাবে।