বাবা-ভাইয়ের পর চলে গেলেন সামিরাও

বাবা-ভাইয়ের পর চলে গেলেন সামিরাও

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের পাঁচ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনার ১১ দিন পর মারা গেলেন মেয়ে সামিরা ইসলামও (২০)। ঘটনার দিনই হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল সামিরার বাবা রফিকুল ইসলাম (৫০) ও ভাই মাইকুল ইসলামকে (১৭)। সামিরার মা হোসনে আরা বেগম (৪৫) ও আরেক ভাই সাদিকুল ইসলাম (২৫) চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হওয়ায় দুইদিন আগে বাসায় ফিরেন।   

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, ঘটনার পর থেকে সামিরার আর জ্ঞান ফিরেনি। তিনি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। 

শুক্রবার (০৫ আগস্ট) রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল গাফ্ফার জানান, সামিরার কিডনি, লিভার কাজ করছিল না। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।   ওসমানীনগর উপজেলার যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম গত ১২ জুলাই স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে দেশে এসেছিলেন। ঢাকায় এক সপ্তাহ থেকে গত ১৮ জুলাই তারা ওসমানীনগরের তাজপুর স্কুল রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে রফিকুল স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে একটি কক্ষে এবং ওই বাসার আরও দুইটি কক্ষে তার শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালক ও শ্যালকের স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ২৬ জুলাই সকালে অন্যরা ঘুম থেকে উঠলেও রফিকুল ও তার স্ত্রী সন্তানরা ঘুম থেকে না উঠায় ডাকাডাকি শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে কক্ষের দরজা ভেঙে রফিকুল, তার স্ত্রী হোসনে আরা, ছেলে সাদিকুল ও মাইকুল, মেয়ে সামিরাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। হাসপাতালে নেওয়ার পর রফিকুল ও তার ছেলে মাইকুলকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেলেন রফিকুলের মেয়ে সামিরাও।

মর্মান্তিক এ ঘটনার রহস্যজট এখনও খুলেনি। ঘটনার দিন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চিকিৎসকদের উদ্বৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘বিষক্রিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষক্রিয়া খাবার থেকে নাকি অন্যভাবে হয়েছে তা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’ 
 
গত বুধবার রফিকুলের স্ত্রী হোসনে আরা ও ছেলে সাদিকুল সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর সেই বাসায় যান পুলিশ সুপার। এরপর তিনি জানান, বিদ্যুৎ না থাকলে ওই বাসায় জেনারেটর চালানো হয়। কিন্তু জেনারেটরটি চালালে দমবন্ধ পরিবেশের তৈরি হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। 

প্রবাসী রফিকুলের স্ত্রী হোসনে আরা পুলিশকে জানান, ঘটনার দিন দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় তারা জেনারেটর চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর কীভাবে কি হয়েছে তারা টের পাননি। হোসনে আরার বক্তব্য উদ্বৃত্ত করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘জেনারেটরের ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।’ 

এসপি আরও জানান, রফিকুল ও তার ছেলে মাইকুলের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।