বীভৎস পরিস্থিতির কথা জানালেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া ইউএনও

বীভৎস পরিস্থিতির কথা জানালেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া ইউএনও

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভয়ংকর ও বীভৎস অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ। প্রাণে বেঁচে সেই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন তিনি।

ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ ও তার স্ত্রী উম্মুল আরা লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় ভিআইপি কেবিনে ছিলেন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন এই দম্পতি। তবে তড়িঘড়ি করে লঞ্চ থেকে নামার সময় তার স্ত্রীর পা ভেঙে গেছে। এছাড়া, পাথরঘাটার বেশ কজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত ব্যক্তিরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশালের শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সেই পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, রাত তিনটার দিকে হঠাৎ করে লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় আমাদের ভিআইপি কেবিনসহ আশপাশ এলাকায় ধোঁয়ায় নাক বন্ধ হয়ে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের চিৎকারে এক বীভৎস অবস্থা তৈরি হয়। এ সময় স্ত্রী উম্মুল আরাকে নিয়ে কত দ্রুত ও কীভাবে যে লঞ্চের সামনের দিকে নেমে এসেছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। এরই মধ্যে ঝালকাঠির দিয়াকুল গ্রামে নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হলে আমরা দ্রুত নেমে পড়ি। এ সময় কয়েক শ মানুষ লঞ্চ থেকে নামতে পারলেও বেশির ভাগ মানুষ লঞ্চে আটকা পড়ে যায়। অনেককে দেখা গেছে, নিজের প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। প্রচণ্ড শীতের রাতে তারা নদী সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন কি না, তা স্বজনেরাও বলতে পারছেন না।

ইউএনও বলেন, অনেককে দেখা গেছে, লঞ্চ থেকে নামার সময় তার শিশুসন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সময় তারা আবার লঞ্চের দিকে দৌড়ে গিয়ে আগুনে আটকা পড়ে যান। এ অবস্থায় লঞ্চে শিশু, নারীসহ যাত্রীদের চিৎকারে এক বীভৎস অবস্থার তৈরি হয়।

পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুহাম্মদ নাছরুলুল্লাহ তার স্ত্রীসহ তাদের একমাত্র আড়াই বছরের সন্তান তাবাচ্ছুমকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। তবে ওই দম্পতি প্রাণে রক্ষা পেলেও তাদের সন্তান নিখোঁজ আছে।

মুহাম্মদ নাছরুলুল্লাহর বরাত দিয়ে তার ভায়রা পাথরঘাটা শহরের কাপড় ব্যবসায়ী রুহুল আমিন মুঠোফোনে বলেন, তাবাচ্ছুমকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ ভোর থেকে লঞ্চ এলাকা, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করেও বেলা ১১টা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ মেলেনি। পাথরঘাটার এ রকম প্রায় ১০ জন নিখোঁজ আছেন।