বালাগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলায়  অন্ধ হওয়ার পথে এক যুবক : প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা

বালাগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলায়  অন্ধ হওয়ার পথে এক যুবক : প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা

ডেস্ক রিপোর্ট: 
প্রতিপক্ষের হামলায় অন্ধত্ববরণের পথে বালাগঞ্জের আব্দুল হামিদ নামের এক যুবক। অস্ত্রের আঘাতে উপড়ে গেছে তার এক চোখ। অপর চোখও জখমে নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকায় চিকিৎসা চলছে যুবকের। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, পৃথিবীর আলো বাতাস দেখার সম্ভাবনা খুবই কম। এমনকি জীবনও সংকটাপন্ন। এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের খুজকিপুর গ্রামে। অন্ধত্ববরণের পথে আহত যুবক আব্দুল হামিদ খুজকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তার তিনটি অবুঝ সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে, থানায় মামলা হলেও হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অভিযোগ, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। 

আহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, বর্বরোচিত এমন হামলার ঘটনা ঘটে গত ৩০ এপ্রিল। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কুপে মাথায় গভীরতম ক্ষত নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল হামিদ। তাকে গুরুতর আহত করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে হামলাকারীরা।

জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক খাজুরের ছেলে আসুক মিয়ার নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কপাল আঘাত করলে তিনি মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার একটি চোখ উপড়ে যায় এবং আরেকটি চোখ গলে যায়। তার আর্তচিৎকারে স্বজনরা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদের ভাই জাকির ও আত্মীয় জুনেদকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদের স্ত্রী ও সন্তানদের টানা হেচড়া করে মাটিতে ফেলে বেদম মারপিট করে। আশংকাজনক অবস্থায় আব্দুল হামিদ, জাকির ও জুনেদকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আব্দুল হামিদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। অস্ত্রের আঘাতে তার দুটি চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি প্রাণে বেঁচে ফিরলেও দৃষ্টিহীন অবস্থায় বেঁচে থাকতে হবে, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় আব্দুল হামিদের ভাই আব্দুর রকিব বাদী হয়ে ৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করে অজ্ঞাত আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে বালাগঞ্জ থানায় মামলা (নং-০১(৫)২২)দায়ের করেন।

মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন- বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের খুজকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক খাজুরের ছেলে আসুক মিয়া, জামাল মিয়া, হায়দর রাজা এমরান, একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুস সত্তার লেবু, আব্দুল কুদ্দুস এহিয়া, নুনু মিয়ার ছেলে নিরু মিয়া, মৃত রূপা মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া, মৃত পঙ্কী মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলা দায়েরের পর সন্ত্রাসী আসুক ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
এদিকে, আসামিরা গ্রেফতার না হওয়াতে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন স্বজনরা। আব্দুল হামিদের স্ত্রী তিন অবুঝ সন্তান নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। শিশুদের মক্তব মাদ্রাসায় যাতায়াতও বন্ধ রয়েছে। এমনকি তার স্বজনদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
আসামীরা গ্রামে সশস্ত্র মহড়া দিতে থাকায় গ্রামের লোকজন মসজিদে যাতায়াত করতে পারছেন না। অবিলম্বে সন্ত্রাসী আসুক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন আহতদের স্বজনরা।
বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রমা প্রসাদ চক্রবর্তী জানান, ঘটনার পর থেকে মামলার মূল আসামীরা আত্মগোপনে রয়েছে। যে কারণে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।