ভেজাল ওষুধ তৈরি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে যাবজ্জীবন

ভেজাল ওষুধ তৈরি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে যাবজ্জীবন

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
ভেজাল ও নকল ওষুধ তৈরি করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে ঔষধ আইন ২০২৩ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন আইনে ‘ঔষধ’-এর সঙ্গে ‘কসমেটিকস’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে। 

আইনটি এখন থেকে ‘ঔষধ এবং কসমেটিকস আইন-২০২৩’ নামে পরিচিত হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। 

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তিন ফসলি জমিতে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনও ধরনের প্রকল্পই করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেন। 

মূলত আবাদী জমি রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার এক সদস্য যুগান্তরকে জানিয়েছেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী কোনও জমি অনাবাদী না রেখে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্তসমূহ সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
 
তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কাছ থেকে তিন ফসলী জমিতে উন্নয়ন ও স্থাপনা তৈরির কাজের জন্য আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে ভবন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেনে যে, কোনো তিন ফসলী জমি নষ্ট করা যাবে না এবং প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
কোনও ওষুধ ক্ষতিকারক হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা বাজার থেকে বাতিল করার বিধান রাখা হয়েছে নতুন আইনে। 

আর এই আইন অনুযায়ী ওষুধের উৎপাদন থেকে সব ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গাইডলাইন অনুসরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এখন থেকে নতুন করে প্রসাধনী উৎপাদন করতে হলে সরকারের লাইসেন্স বা অনুমোদন নিতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন ওষুধ আইনে ৩০টি অপরাধ যুক্ত করা হয়েছে। যা আগের আইনে ছিল না। এ আইনে ভেজাল এবং নকল ওষুধ তৈরি করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা  হয়েছে। আর নিবন্ধন ছাড়া কারখানা থেকে ওষুধ উৎপাদন করলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, প্রস্তাবিত এ আইনে কিছু ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিবে। আইনটিতে অ্যন্টিবায়োটিক প্রসঙ্গও রয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়া অ্যন্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না। কোনও দোকান থেকে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যন্টিবায়োটিক বিক্রি করা হলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত আইনে মেডিক্যাল ডিভাইস ব্যবহার করার বিষয়েও নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, প্রসাধনী উৎপাদন এবং বিতরণও এই আইন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হবে। ওষুধ প্রসাধন অধিদফতর এর তদারকি করবে।

এছাড়াও বৈঠকে ‘কপিরাইট আইন, ২০২২’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই বৈঠকে প্রতিবছর ১৬ জানুয়ারিকে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস‘ হিসেবে ঘোষণা এবং দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত এ বিষয়ে পরিপত্রের ‘খ‘ ক্রমিকে তা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।