ভারতীয় উপমহাদেশের ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন

ভারতীয় উপমহাদেশের ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ঐশী ও দীপ্সিতা এসব কথা বলেন। ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডাকসুর সাবেক নেতা ও টিএসসিভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা যৌথভাবে ‘মানবতা, মুক্তি, স্বাধীনতা ও সমতার বিশ্বের জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাবনা’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

এ সময় জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ বলেন, ‘আমাদের দেশে জরুরি অবস্থার সময় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ভূমিকা, একই কথা আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে শুনতে পাই। গর্বের বিষয় যে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কথা বলতে পারছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে আমরা প্রতিনিয়ত যে অনুপ্রেরণা পাই, এটি আমাদের কাছে বিশাল একটা ব্যাপার। আপনাদের প্রতিনিয়ত কুর্ণিশ জানাই।’

ঐশী ঘোষ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা শোষণহীন সমাজের জন্য সামনের সারিতে থেকে লড়াই করছেন। আমাদের দেশে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়—এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষার দাবিতে লড়ে গেছেন। আমাদের দেশ আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমাদের রাজনীতি প্রতিনিয়ত শেখায় খেটেখাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে, প্রত্যেক মানুষকে সমানভাবে দেখে তাঁদের জন্য লড়ে যেতে। একটা সুন্দর বিশ্ব তৈরি করার এই লড়াইটা ডাকসু, জেএনইউ ছাত্র সংসদসহ সবাই মিলে লড়ার আশা রাখি।’

গোটা উপমহাদেশের ছাত্র আন্দোলনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা গর্বের জায়গা বলে মন্তব্য করেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠন এসএফআইয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপ্সিতা ধর। তিনি বলেন, ‘আমরা যাঁরা ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত, এপার বাংলা-ওপার বাংলার কাঁটাতার ও মানচিত্রের বেড়াজাল ভেঙে আমরা যেন কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আঠারো বছরের স্পর্ধা হতে পারি, সেই বিশ্বাস ও ভরসা রাখছি। প্রতিবার যখন বাংলাদেশে আসি, তখন আমার মনে হয় যেন নিজের বাড়িতে ফিরছি। কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক পুরোনো। আমার বাড়ির লোকদের কেউ কেউ একসময় বরিশালে থাকতেন, কেউ কেউ ফরিদপুরে থাকতেন। দেশভাগের সময় তাঁরা ভারতে গেছেন।’

দীপ্সিতা বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন। প্রয়োজনে অস্ত্র ধরেছেন, কিন্তু নিজের মাকে পরাধীন হয়ে থাকতে দেননি। আপনাদের দেখে আমরা প্রতিদিন অনুপ্রাণিত হই।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে বঙ্গবন্ধু এখনো প্রাসঙ্গিক। তাঁকে হত্যা করে তাঁর চেতনা ও আদর্শকে খুন করা যায়নি।

ডাকসুর সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। আরও বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক সদস্য ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদার। এরপর ঐশী ঘোষ ও দীপ্সিতা ধরের হাতে বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত ছবির ফ্রেম ও স্মারক বই তুলে দেন ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীরা।