মাঠ ছাড়ছে না বিএনপি

মাঠ ছাড়ছে না বিএনপি

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক মাঠ। বরাবরই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। নেতাকর্মীদের মাঠে রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে টানা কর্মসূচি পালন করছে দলটি। এসব কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কয়েক হাজার। প্রায় অর্ধশত মামলায় আসামি হয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এসবের পরও মাঠ ছাড়ছে না বিএনপি। যে কোনো মূল্যে মাঠে থাকার প্রত্যয় দলের নেতাকর্মীদের।

জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে টানা সমাবেশ করছে বিএনপি। ছাড়াও রাজধানীর ১৬টি সাংগাঠনিক জোনে সমাবেশ করছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর বিএনপি। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এসব কর্মসূচি কেন্দ্র করে কয়েক জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি। এতে দলটির ৪ জন নিহত হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২২ আগস্ট থেকে এ পযর্ন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন তাদের দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মী। এসব ঘটনায় ৩৫০ জনের বেশি গ্রেফতার হয়েছেন। চার হাজার ৩শর বেশি নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২১ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে।

তাদের দাবি, হামলা-মামলার শিকার ও নিহত হওয়ার পরও বিএনপির কর্মসূচিতে কোনো প্রভাব পড়ছে না। আগের থেকে দিন দিন লোক সমাগম বেশি লক্ষ্য করা গেছে। সমাবেশগুলোতে আসার সময় নেতাকর্মীরাদের লাঠিসোটা নিয়ে আসতে দেখা গেছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এবার বিএনপির অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী। জানগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি রাজপথে আছে, রাজপথে থাকবে। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছে- ‘দেশ যাবে কোন পথে-ফয়সালা হবে রাজপথে’। সেই রাজপথের ফয়সালা শুরু হয়ে গেছে। হামলা-মামলার তোয়াক্কা আমরা করছি না। আমাদের কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ লোকজন আসছে। জনগণ ভয়ভীতি-রক্তপাত উপেক্ষা করে অংশ নিচ্ছে। জনগণ রুখে দাঁড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএনপি ২০১৪-১৫ সালে আন্দোলন করেছে। তখন সরকার রাষ্ট্রের পূর্ণ শক্তিকে অপব্যবহার করে আন্দোলন ব্যর্থ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তারা গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে। জানগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে। এখন জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বিএনপি ও জনগণ এখন দমন নিপীড়ন তোয়াক্কা করছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শতে জানান, দলের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে, এখন থেকে বিএনপি নিয়মিত কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আমাদের আবারো নতুন কর্মসূচি খুব শিগগিরই আসছে। তবে এখনই আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবো না। আগামী বছরের শেষের দিকে চূড়ান্ত আন্দোলন হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দমন-পীড়ন চালিয়ে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না, বরং নির্যাতনের মাত্রা যতই বাড়বে, ততই বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীরা সুসংগঠিত হয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান, গতিশীল ও শক্তিশালী করবে।