মৌলভীবাজারে কলেজ ছাত্র খুনের ঘটনায় মামলা

মৌলভীবাজারে কলেজ ছাত্র খুনের ঘটনায় মামলা

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা ঃ মৌলভীবাজার সদরের বর্ষিজোড়া গ্রামে নিজ ঘরে মা-বাবা ও বোনের সামনে কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন নিহত রেজাউল করিম নাঈমের বাবা মো. চেরাগ মিয়া। গত বুধবার দায়েরকৃত মামলার (৮/৩৪০) আসামীরা হলেন, বর্ষিজোড়া এলাকার নুরুল ইসলাম (৫৫), তার ছেলে রনি মিয়া (২৩), কাদির মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৪), ইদন মিয়ার ছেলে সোহান মিয়া (১৯), আব্দুল আজিজের ছেলে মো. সাইমন ইসলাম, ইদন মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (২১), আলামিন মিয়া (২০), সাকিল হোসেন (২১), প্রধান আসামী নুরুল ইসলামের স্ত্রী পারভিন বেগম (৪৫) ও মেয়ে জেসি আক্তার (২০) সহ অজ্ঞাত ৪-৫জন। পুলিশ এক আসামী সাইমন ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের টিভি হাসপাতাল এলাকার বর্ষিজোড়া গ্রামে মো. চেরাগ মিয়ার ঘরে গিয়ে প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম দাবি করেন তার ছবি ব্যবহার করে চেরাগ মিয়া ফেইক আইডি চালাচ্ছেন। সেসময় পাশের রুম থেকে নাইম এসে ফেইক আইডি কে খুলেছে বের করা যায় উল্লেখ করে তাকে মোবাইল দেখাতে বলেন। একথা বলতেই তার উপর ক্ষেপে যায় নুরুল ইসলাম। এরপর শুরু হয় মারধর।

একপর্যায়ে নুরুল ইসলামের ছেলেসহ আরো ১২ থেকে ১৫ জন এসে হামলা করে। নাইম, তার মা, চাচি, বোন ভয়ে অন্যরুমে লুকিয়ে যায়। তারা রুমের দরজা ভেঙে নাঈমকে ধরে এনে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে নাঈমের বাবা-মা তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হলে তার মৃত্যু হয়। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে পরিবারে সবার বড় নাঈম। সে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। নিহত নাঈমের বাবা মো. চেরাগ মিয়া বলেন, প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের সাথে কোন পূর্বশত্রুতা ছিলনা। গত মঙ্গলবার বিকালেও আমার বাড়িতে এসে চা খেয়েছেন। আর সন্ধ্যার সময় হামলা করে। তারা রুমের দরজা ভেঙে চোখের সামনে আমার ছেলেকে হত্যা করে ফেললো। এঘটনায় বর্ষিজোড়া এলাকায় চলছে শোকের মাতম। গত বুধবার রাতে মৌলভীবাজার শহরের দরগাহ জামে মসজিদের প্রাঙ্গনে নাঈমের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা মৌলভীবাজার মডেল থানায় দশ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে। বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।