লকডাউনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বাড়ি  পৌঁছে দিলেন জগন্নাথপুরের ইউএনও 


জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ)থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : নিকেশ বৈদ্য সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের একমাত্র পত্রিকা বিক্রেতা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। করোনাকালে পত্রিকা বিক্রি মন্দা হয়ে গেলে সংসারের ভরণ পোষণ চালাতে গিয়ে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। 


গত ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনের কারণে পত্রিকা বিক্রি বন্ধ থাকায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সম্প্রতি একটি স্ট্যাটাস দেন। বিষয়টি নজরে আসে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহের। তিনি গতকাল বুধবার নিকেশ  বৈদ্যর পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শেরপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের প্যাকেট নিয়ে হাজির হন। শুধু নিকেশ বৈদ্য নয় চলমান লকডাউনে খাবার সংকটে থাকা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, দিনমজুর, প্রতিবন্ধী এরকম ১০ বাড়ি গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার তুলে দেন। 
এর আগে সকালে উপজেলা পরিষদের আব্দুল সামাদ আজাদ মিলনায়তনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, খেটে খাওয়া দিনমজুর, মুচি ও বেদে সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক মানুষের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার তুলে দেয়া হয়। 


এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপম দাস অনুপ উপস্থিত ছিলেন। 


জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চলমান লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রদানের অংশ হিসেবে জগন্নাথপুর উপজেলায় সাত শতাধিক মানুষ কে নিত্যপণ্য প্রদান করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার থেকে এসব বিতরণ শুরু হয়েছে।  
নিকেশ বৈদ্য জানান, পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করাই আমার একমাত্র পেশা। ১৯৯৯ সাল থেকে  এ পেশায় আছি অন্যকিছু করতে পারি না। গত ১ জুলাই থেকে লকডাউনের কারণে পত্রিকা বিক্রি বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। বৃষ্টির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিয়ে আসায় আমি খুশি।
বাড়ী জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সত্যন্দ্র দাস জানান, লকডাউনে খুব কষ্টে আছি। ঘরে বসে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে।  
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছি। চলমান লকডাউনে অনেক মানুষ খাবার সংকটে আছে। তাদের খোঁজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেয়া আমার দায়িত্ব মনে করেই যাচ্ছি।