শিক্ষক নেই ৯ বছর, ব্যাহত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা কার্যক্রম 

শিক্ষক নেই ৯ বছর, ব্যাহত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা কার্যক্রম 

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
গাইবান্ধায় সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা রিসোর্স শিক্ষকের পদটি প্রায় ৯ বছর ধরে শুন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ এ পদে শিক্ষক না থাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

গাইবান্ধা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন ১৯৭৬ সালে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে হোস্টেল সংলগ্ন স্থানের একটি ভবনে সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এই দপ্তরের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা রিসোর্স শিক্ষক বদলী হন ২০১৩ সালের ২৮ জুন। তারপর থেকে পদটি শুন্য রয়েছে। তবে হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার, কুক কাম অ্যাটেনডেন্ট ও নিরাপত্তা প্রহরী পদে তিনজন কর্মরত রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার মো. রিয়াজুল হক গত ২৪ মার্চ থেকে রিসোর্স শিক্ষক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

৬ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের এই সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর অ্যাকাডেমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য তাদের ভর্তি করা হয় মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজে। আবাসিক সুবিধা সম্বলিত ১০টি আসনের মধ্যে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে চারজন। সরকারি বিধি মোতাবেক বিভিন্ন ভাতা ও সুযোগ-সুবিধাও পান তারা। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে ২১ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছয়জন এবং এইচএসসিতে চারজন। বর্তমানে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে চারজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পড়ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রিসোর্স শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার মো. রিয়াজুল হক বলেন, ‘রিসোর্স শিক্ষক ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করাবেন। কোন শিক্ষার্থীর কী সমস্যা তা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনসহ পুনর্বাসনে সহায়তা করবেন। খাবারের মান সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করবেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ দাপ্তরিক অন্যান্য দায়িত্ব পালন করে থাকেন একজন রিসোর্স শিক্ষক।’

তিনি আরো বলেন, রিসোর্স শিক্ষক না থাকায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সব চাপ একা আমাকে সামলাতে হচ্ছে। যেমন- কোন এলাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খুঁজতে বের হলে দপ্তর কর্মকর্তা শুন্য হয়ে পড়ে। সেইসাথে ছুটিতে থাকলে বা দাপ্তরিক কাজে বাহিরে গেলে তখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তাই তাদের একা রেখে ঠিকমতো বাহিরে গিয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারি না।

গাইবান্ধা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ পদটি শুন্য থাকায় এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শুন্যপদে জনবল চেয়ে প্রতিমাসেই আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু কাউকেই এখন পর্যন্ত পদায়ন করা হয়নি।’