শেভরনের অর্থায়নে বাস্তবায়িত  জীবিকা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠিত 

শেভরনের অর্থায়নে বাস্তবায়িত  জীবিকা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠিত 

রয়েল ভিউ ডেস্ক:        
শেভরন-এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত জীবিকা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি ব্র্যাক সেন্টার, ব্র্যাক এ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার, ব্র্যাক, শেভরন, ব্র্যাক ইউএসএ, আইডিয়া, আইডিই এবং সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর বিভিন্ন প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এই প্রকল্পটি বৃহত্তর, সিলেট, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলার শেভরন-পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্রের পাশ্ববর্তী এলাকায় অক্টোবর ২০১৫ সাল থেকে কাজ করে আসছে। জীবিকা, সমবায়ের সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নেতৃত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনগুলোর দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব অর্জনের জন্য কাজ করেছে। জীবিকা প্রকল্পটি শেভরন গ্যাসফিল্ড পাশর্^বর্তী এলাকার ১১০টি দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহায়তাসহ প্রায় ২২,৪৭০ জনেরও অধিক মানুষের (প্রায় ৪২১৬টি পরিবার) আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন রিয়ার এ্যাডমিরাল এম মকবুল হোসাইন, পরিচালক, অপারেশনস, ব্র্যাক।
অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আহসান কবীর, বি.সি.এস (কো-অপারেটিভ), অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, সমবায়বিভাগ, এলজিইডি ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং এ্যারিক এম. ওয়াকার, প্রেসিডেন্ট, শেভরন বাংলাদেশ, মোহাম্মদ ইমরুল কবীর, ডিরেক্টর কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স, শেভরন বাংলাদেশ এবং লরেন গডফ্রে, সিনিয়র ম্যানেজার অব এডুকেশন, ব্র্যাক ইউএসএ। এছাড়াও শ্যাম সুন্দর সাহা, প্রকল্প পরিচালক, সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি (আইডিপি), ব্র্যাক এবং কমিউনিটিভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে জীবিকা প্রকল্পের যাত্রা, অর্জনসমূহ এবং বিশেষ শিক্ষণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন প্রকল্পটির সমন্বয়কারী এএসএম সফরুল ইসলাম। মোঃ আহসান কবীর, বি.সি.এস (কো-অপারেটিভ), বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের শেভরন-চালিত গ্যাসফিল্ডের পাশর্^বর্তী এলাকায় বসবাসকারী ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে জোরদার করার জন্য, বিশে^র বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি শেভরনের মধ্যকার অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি আরোও উল্লেখ করেন যে, জীবিকার মত উদ্যোগসমূহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সরকারের সহযোগী হয়ে কাজ করে থাকে। ব্র্যাক ইউএসএ এর পক্ষে বক্তব্য রাখেন লরেন গডফে। তিনি এই প্রকল্পের পরিসমাপ্তি হলেও জীবিকার কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনগুলো সমবায় বিভাগের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব ও সুশাসনের বিকাশসহ হিসাব পরিচালনার প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজকরণ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও এই সাফল্যের ধারাবাহিকতাগুলো দেখতে পারবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। শেভরনের পক্ষ
থেকে জীবিকা প্রকল্প এবং সরকারি সমবায় বিভাগকে কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রাতিষ্ঠানিকরণের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং প্রকল্পের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন মুহাম্মদ ইমরুল কবির এবং এ্যারিক এম ওয়াকার। এ্যারিক এম ওয়াকার জোর দিয়ে বলেন যে, জীবিকা হল শেভরন বাংলাদেশ পার্টনারশিপ ইনিসিয়েটিভ বা বিপিই-এর অধীনে অন্যতম প্রধান প্রকল্প যা তাদের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি।
জীবিকার প্রকল্পের অংগ্রহনকারী লায়লা সুলতানা, সেক্রেটারি, দোনোকানিন্দ সবুজ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং মোঃ রুবেল আহমেদ, সভাপ্রধান, টুকেরগাঁও সুরমা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন লিমিটেড বলেন যে, জীবিকা প্রকল্পের মাধ্যমে ব্র্যাক-শেভরন এবং আইডিয়া থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ তাদের নিজেদের এবং কমিউনিটির অন্যান্য মানুষদেরকে গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন পরিচালনা কৌশল, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্যোগের উন্নয়ন, বাজার ব্যবস্থা এবং পরিষেবা প্রধানকারীদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে এন্টারপ্রাইজ উন্নত করা ইত্যাদি বিষয়ে শিখতে সহায়তা করেছে। তারা উভয়েই তাদের নিজেদের তথা গ্রামের অন্যান্য নারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য জীবিকাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এছাড়াও প্রকল্পের অংশগ্রহণকারীদের গল্প সহভাগিতার পাশাপাশি কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনের স্টল এবং জীবিকা মডেলটিও এই অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও একটি ডকুমেন্টারির মাধ্যমে কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনের দু’জন নেতার অভিজ্ঞতার আলোকে বিগত বছরগুলোতে জীবিকার যাত্রা ও এর প্রভাবে সৃষ্ট উন্নয়নও প্রদর্শন করা হয়।