সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, সমাজ সংস্কারের মাধ্যম
রয়েল ভিউ ডেস্ক :
সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, সমাজ সংস্কারের মাধ্যম বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২০ প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
শুধু বিনোদন নয়, বিনোদনের সাথে সাথে আমাদের সমাজ সংস্কারে, মানুষকে শিক্ষা দেয়া বা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, সমাজ সংস্কারের মাধ্যম।
তিনি বলেন, আমাদের সিনেমা শিল্পটা অ্যানালগ সিস্টেমে থেকে গিয়েছিল। সেটাকে আমি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন করতে চাই। আমাদের জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের বিনোদনের একটা মাধ্যম হিসেবে সিনেমাকে দেখতে চাই। আমি চাই আমাদের জেলা-উপজেলায় সব জায়গায় সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হোক। সে ক্ষেত্রে আমি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলাম। মাঝখানে ভাটা পড়ে যাওয়ায় কেউ উদ্যোগী ছিল না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এফডিসি গড়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প এগিয়ে যাক। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। যে তরুণরা সিনেমা শিল্পে এগিয়ে এসেছেন আমি বিশেষভাবে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। এরাই তো ভবিষ্যৎ।
চলচ্চিত্রের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, চলচ্চিত্র আমাদের জীবনের চিত্র। জীবনের প্রতিচ্ছবি। চলচ্চিত্র সমাজ সংস্কার করতে পারে। এর মাধ্যমে অনেক বার্তা পৌঁছে দেয়া যায়। ইতিহাসের বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে চলচ্চিত্র। সমাজের অনেক অনিয়ম দূর করতে চলচ্চিত্র বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এদিকে অসুস্থ অভিনেত্রী আনোয়ারার সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অভিনেত্রী আনোয়ারাকে আজীবন সম্মাননা দেয়ার মধ্য দিয়ে পুরস্কার প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তবে শারীরিক অসুস্থতার জন্য নিজে উপস্থিত হতে পারেননি আনোয়ারা। তার হয়ে আজকের আয়োজনের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হাত থেকে পুরস্কার নেন আনোয়ারার মেয়ে মুক্তি।
আনোয়ারাকে মঞ্চে না দেখে কারণ জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। অভিনেত্রী অসুস্থ জানতে পেরে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আনোয়ারা আসতে পারেননি। আমি জানতাম না যে আনোয়ারা অসুস্থ। শুনে খুব দুঃখ পেলাম। তার রোগমুক্তি কামনা করি।
নিজেকে সিনেমাপ্রেমী আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো সিনেমা হলে যেতে পারি না। কিন্তু প্লেনে যখন দেশের বাইরে যাই তখন দেশি সিনেমা দেখি। প্রোডাকশনগুলো খুব ভালো লাগে। আবার কেউ যদি পেনড্রাইভে ছবি পাঠান সেটাও দেখি। ভালোই লাগে সিনেমা দেখতে। আমাদের দেশে সুপ্তপ্রতিভা আছে। তাদের কাজ দেখে মুগ্ধ হই।
এসময় অসহায় শিল্পীদের জন্য কল্যাণ তহবিল নিয়েও কথা বলেন তিনি। শিল্পী-কলাকুশলীদের জন্য একটা ট্রাস্ট করে দিয়েছি। যারা বিত্তবান তারা এই ফান্ডে সাহায্য করবেন। আমি আহ্বান জানাচ্ছি- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ হয়েছে আগেই। বুধবার পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারও অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিল্পীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।এরপর একে একে শিল্পীরা মঞ্চে আসেন তাদের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ করতে।
