সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে : মির্জা ফখরুল

সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে : মির্জা ফখরুল

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
গুম হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবার তাদের সম্পদ-ব্যাংকের অর্থ এমনকি ওয়ারিশ সার্টিফিকেট পর্যন্ত তুলতে পারছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এমনও পরিবার আছে যাদের দুবেলা দু'মুঠো ভাত জোটে না। শুধু গুম নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

আজ শুক্রবার (২৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার ও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের গুম হওয়ার এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে তার বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী। গত ১৫ বছরে তাদের দুঃশাসনে চৌধুরী আলমসহ কত মানুষ সন্তানহারা হয়েছে। কতজন স্বামী হারা হয়েছেন। তার কোনো সঠিক হিসাব আমরা করতে পারিনি। আপনারা জানেন, বিরোধী আন্দোলন দমন করার জন্য এ গুম, খুন, বেআইনিভাবে আটক করে হত্যা করা, ক্রসফায়ার কিলিং এমনভাবে বেড়েছে, যা কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজে হতে পারে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, চৌধুরী আলমের গুম হয়ে যাওয়া শুধু পরিবারের ক্ষতি নয়, শুধু বিএনপির ক্ষতি নয়, আমি মনে করি এটা দেশ ও জাতির ক্ষতি। চৌধুরী আলম একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন। সে কারণে তার অনুপস্থিতিতে আমাদের একটা বিরাট শূন্যতার মধ্যে পড়তে হয়েছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন চৌধুরী আলমকে সুস্থ শরীরে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে দেন। 

তিনি বলেন, গুম হওয়া নেতাদের পরিবার তাদের সম্পদ, ব্যাংকের অর্থ, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট পর্যন্ত তারা তুলতে পারছে না। তারা কোনো রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না। চৌধুরী আলম মোটামুটি সচ্ছল থাকায় তার পরিবার, ছেলে-মেয়েরা টিকে আছেন। এমনও পরিবার আছে যাদের দুবেলা দু’মুঠো ভাত জোটে না। শুধু গুম নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এরা প্রত্যেকে মিথ্যাবাদী। এদের মতো মিথ্যা কথা কেউ বলতে পারে না। অনর্গল মিথ্যা কথা বলে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুচলেকা দিয়ে ওয়ান ইলেভেনের সময় কে আমেরিকায় গিয়েছিলেন সেটা আমরা সবাই জানি। জাতির সঙ্গে বেইমানি তার (শেখ হাসিনা) আজকের কাজ না। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে উনি প্রকাশ্য জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন- এরশাদের সঙ্গে যারা নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেঈমান হবে। তার দুই’দিন পরেই উনি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে এরশাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার সিলেটে গিয়েছিলাম। সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিজের চোখে না দেখলে ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা করা যায় না। মানুষ যে কষ্টে আছে। তাদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, বাঁচার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। অথচ প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে গিয়ে ঘুরলেন। সার্কিট হাউজে নেমে সেখানে দশ জনকে টোকেন ত্রাণ দিয়েছেন। তারপর বলেছেন সব হয়ে যাবে। কিন্তু আমি গতকাল রাতে এসেছি তখন পর্যন্ত খবর পেয়েছি সেগুলো কিছুই করা হয়নি। সেনাবাহিনী নামার পরে কিছু কাজ হচ্ছে। আর সবচেয়ে বেশি কাজ করছে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা। তারা নৌকা ভাড়া করে নিজেদের পয়সা দিয়ে ত্রাণ নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ও গুম হওয়া চৌধুরী আলমের স্ত্রী হাসিনা চৌধুরী, বড় ছেলে আবু সাইদ চৌধুরী, বড় মেয়ে মাহমুদা আক্তার, ছোট মেয়ে মাহফুজা আক্তার, ছোট ছেলে আবু সাদাত চৌধুরী, ছোট চাচা খুরশীদ আলম মিন্টু, শাহবাগ থানা বিএনপি নেতা এমএ হান্নান প্রমুখ।