সংলাপ নয়, সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি: মির্জা আব্বাস

সংলাপ নয়, সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি: মির্জা আব্বাস

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
বিএনপি কোনো সংলাপে যাবে না উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমরা কোনো সংলাপ চাইনি, আমরাতো চেয়েছি সরকারের পদত্যাগ।’ সোমবার (৬ মার্চ) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেক চুরি করেছেন, অনেক ডাকাতি করেছেন। সুতরাং আপনারা এখন চলে যান। বিদায় হন এ দেশের জনগণকে বাঁচান।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘এই দানবীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। আর যারা নির্বাচনে যেতে চান বা যাবেন তাদের কারো পা আস্ত থাকবে না।’

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনারা রাজনৈতিক আচরণ শিখুন। মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন, মানুষের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। আমাদের নেত্রী তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু কখনোই আজকের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলেননি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পুলিশের উন্নয়নের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। পুলিশের উন্নয়ন হবে পুলিশের সন্তানরা ভালো থাকবে, ভালো খাবে, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ওই জায়গায় যদি পুলিশকে ঘুষ দেওয়া হয়, আওয়ামী লীগের কর্মচারীর মতো ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমাদের আপত্তি রয়েছে। পুলিশকে পুলিশের আচরণ করতে হবে। আমরা ট্যাক্স দেই, আপনি গণতন্ত্র প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আপনি আওয়ামী লীগের কর্মচারী নন।

বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়- আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কখনই ভয় পায়নি। এ যাবৎকাল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বিএনপি তিনবার ক্ষমতায় গিয়েছে। কিন্তু কখনো ভোট চুরি করে যায়নি।‘

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে আব্বাস বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারতো আপনাদের দাবি, বিএনপির দাবি নয়, কখনোই ছিল না। এখন আপনাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন। আপনারা নির্বাচনে ভয় পান এটাও সঠিক নয়, আপনারা দেশের জনগণকে ভয় পান। এদেশের মানুষকে ভয় পান, কারণ আপনারা যে লুটপাট চুরি করেছেন তার বিচার তো একদিন হবেই। সুতরাং আপনারা জনগণকে ভয় পান।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় বলেন জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি নাকি পাকিস্তানের চর ছিলেন; প্রধানমন্ত্রী তাহলে ৭২ সালে ক্ষমতায় ছিলো কারা? আপনার বাবা-ই তাকে উপাধি দিয়েছিলো তাহলে আপনার বাবার শাস্তি হওয়া উচিৎ।

সরকারের উদ্দেশ করে বুলু বলেন, ২০১৪ সালের মতো যদি মনে করেন দেশে আরেকটি নির্বাচন হবে; তাহলে সেটা ভুল করবেন। এই দেশে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবসহ সব কারাবন্দির মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান, সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, গোলাম মোস্তফা সাগর, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, দফতর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন মামুন প্রমুখ।