সিসিক’র অপরিকল্পিত উন্নয়নে জনগণের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে: অধ্যাপক জাকির

 সিসিক’র অপরিকল্পিত উন্নয়নে জনগণের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে: অধ্যাপক জাকির

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
সোমবার সকালে এক ঘন্টা বৃষ্টির পানিতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক, বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত,ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন এলাকা হাঁটু পানির ওপরে তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতা সহ অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন। 

তিনি এক বার্তায় বলেন, সিলেটে বৃষ্টি হয় এটা ঐতিহাসিক ভাবে সত্য। কিন্তু ঘন্টা খানিক বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট জলে ডুবে যাবে, মানুষের ঘর বাড়িতে পানি ঢুকবে এটা একেবারে নতুন ঘটনা। সম্প্রতি দেখা যায়  অল্প বৃষ্টিতেই জনগণ সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। সিলেটে স্মরণকালের প্রলয়ঙ্কারী বন্যার দখল এখনো মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তার ওপর সিসিক’র অপরিকল্পিত উন্নয়নে জনগণের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। জনদাবীকে উপেক্ষা করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নানান কর্মকান্ডে একনায়ক জাতীয় সীদ্ধান্তের মাধ্যমে অপরিকল্পিত ও নির্লজ্জ  প্রকল্পবাজীর কারণে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির নামে জনদুর্ভোগ যখন চরমে এবং অনিয়ম যেখানে জবাবদিহিতার বাইরে তখনই জনগণের পক্ষে সোচ্চার হয়ে দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষকে এগিয়ে এসে জনদাবীর পক্ষে কাজ করার আহবান জানান। 

তিনি বলেন, সিসিক’র অপরিকল্পিত উন্নয়নে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সিটি কর্পোরেশন প্রধানের অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও প্রকল্পবাজি জনগণ বুঝতে পেরেছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগর পিতার প্রকল্পবাজি নিয়ে ঝড় ওঠেছে। গত কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছি, নগর প্রধানের নিজ দলের নেতারাও সমালোচনা করেছেন। তাঁর দলের একজন নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যাপারে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। জনগণের আলোচনার বিষয়বস্তু এখন নগর প্রধানের অপরিকল্পিত উন্নয়ন, প্রকল্পবাজির মাধ্যমে সৃষ্ট নানান অব্যবস্থাপনা। 

উল্লেখ, গত ২১ জুন সিলেট সার্কিট হাউজে মতবিনিময় সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সম্মুখে ১২০০ কোটি টাকা উন্নয়নের বরাদ্দ সম্পর্কে সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত উন্নয়নের কার্যক্রম নিয়ে আমার বক্তব্য যৌক্তিক ও যথাযথ তা আজকের বাস্তবতায় প্রমাণিত। অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিতে হয়েছে কবি বাসিতের জীবন। তিনি ড্রেনে পড়ে আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। শুধু তাঁর জীবন নয় আরো সাংবাদিক বন্ধুগণ সহ অনেকেই এসব অব্যবস্থার কারণে আহত হওয়া সহ ভোগান্তিতে পড়েছেন। নগরীর রাস্তাঘাটের ভাঙা ও অনিয়মের কথা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। নগর পিতার প্রকল্পবাজির জন্য একই রাস্তা বারবার ভাঙেন আর গড়েন। লোকজন এখন বলাবলি করে বেশী ভাঙ্গলে বেশী লাভ এ নীতিতে চলমান আছে সব কার্যক্রম। যেমনটি আমরা দেখেছি, বন্দরবাজার হেড পোস্ট অফিসের সম্মুখে জনগণের টাকা খরচ করে রিকশার জন্য ডিভাইডার দিয়ে আবার ভেঙে ফেলা হয়েছে। এভাবে করেই সমস্ত শহর জুড়ে ভাঙা চলমান রয়েছে। বলা যায়, নগরী এখন ভাঙা-গড়ার শহরে পরিনত হয়েছে।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়া কোনো শহরকেই সুন্দরভাবে গড়ে তুলা যায় না। পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ক্ষতি ছাড়া কিছুই নয়। অপরিকল্পিত উন্নয়নের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে সিলেট সিটি। এসব অব্যবস্থাপনা ও প্রকল্পবাজি থেকে জনগণ মুক্তি ও জবাবদিহিতা চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল তখন সরকারের প্রচুর পরিমাণ অর্থ উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া স্বত্বেও সিসিক'র অপরিকল্পিত উন্নয়নে নগরবাসীর দুর্ভোগ ও ভোগান্তি সত্যিই খুবই দুঃখজনক। মহানগর আওয়ামী লীগ অচিরেই রাস্তা-ঘাট, জলবদ্ধতা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নাগরিক সকল সমস্যার সমাধানের জোর দাবি জানাচ্ছে। তা না হলে অতীতের মতোই মহানগর আওয়ামী লীগ নগরবাসীকে সাথে নিয়ে প্রতিবাদমুখোর হয়ে কর্মসূচী প্রনয়ণে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, নগরবাসীর সত্যিকার জনসেবা প্রাপ্তির প্রশ্নে কোনো ছাড় হবে না।