সীসা দূষণ ঝুঁকিতে সিলেট

সীসা দূষণ ঝুঁকিতে সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার : কলকারখানা না থাকলেও ‘সীসা দূষণ’ ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেটে। ক্ষতিকর এই সীসা দূষণের শিকার হচ্ছেন নারী, শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। সীসা দূষণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

নগরীর জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত হোটেলে সীসা দূষণের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে সিলেট জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। সিলেট জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় আয়োজিত কর্মশালায় সহায়তা করে ইউনিসেফ সিলেট ফিল্ড অফিস।


কর্মশালায় গবেষণার আলোকে তৈরি প্রবন্ধে বলা হয়, সিলেটে ব্যাটারি তৈরির কারখানা বা অন্যান্য শিল্প কারখানা কম থাকা সত্ত্বেও সীসার গড়মাত্রা পাওয়া যায় ৮.৩ মাইক্রোগ্রাম পার ডেসিলিটার এবং প্রায় ৮৪ ভাগ শিশুর ক্ষেত্রেই রক্তে সীসার মাত্রা ছিল সিডিসি কর্তৃক নির্ধারিত মাত্রার ৩.৫ এর চেয়ে বেশি। ছয় বছরের কম বয়সী শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।


সীসা দূষণ দিন দিন মহামারি আকার ধারণ করছে উল্লেখ করে কর্মশালায় জানানো হয়, সম্প্রতি ইউনিসেফ ও সিভিল সার্জন এর মাধ্যমে সিলেটসহ সারা দেশের ৯৮০জন শিশুর মধ্যে গবেষণা চালানো হয়। এর মধ্যে সিলেটের ২৪৮ জন শিশু রয়েছে। পরীক্ষায় প্রত্যেক শিশুর রক্তে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সীসা দূষণের ফলে শিশুদের নানান শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আইকিউ কমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলেও জানানো হয়।


কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, সীসা দূষণের প্রকোপ সাথে সাথে দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা এখনো উদাসীন। এটি নীরব ঘাতক হয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করছে প্রতিনিয়ত। সীসা দূষণের কোন সুনির্ধারিত চিকিৎসা না থাকায় প্রতিরোধই হচ্ছে একমাত্র বাঁচার উপায়। সম্মিলিতভাবে সীসা দূষণ প্রতিরোধের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। 


সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা: স্বপ্নীল সৌরভ রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের মূল পর্বে ‘সীসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি বলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডা. স্নিগ্ধা তালুকদার ও ডা তনুশ্রী তালুকদার। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ সিলেট ফিল্ড অফিসের চীফ কাজী দিল আফরোজা ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত, ইউনিসেফ সিলেট ফিল্ড অফিসের স্বাস্থ্য অফিসার ডা. মির্জা ফজলে এলাহী। কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, অন লাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মহিব চৌধুরী, সাংবাদিক এমএ মতিন প্রমুখ। সিলেটে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।