হবিগঞ্জ জেলার পাহাড়ি এলাকায় মূল্যবান গোলমরিচ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

হবিগঞ্জ জেলার পাহাড়ি এলাকায় মূল্যবান গোলমরিচ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি॥ প্রকৃতির রম্য নিকেতন হবিগঞ্জ জেলার পাহাড়ি এলাকায় মূল্যবান গোলমরিচ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে বর্তমানে খাসিয়া উপজাতির লোকেরা গোলমরিচ চাষ করছেন। গুল্ম জাতীয় গোলমরিচ গাছ দেখতে অনেকটা পান গাছের মতই। গোলমরিচ গাছ অন্য গাছকে বিশেষ করে সুপারি গাছকে অবলম্বন করে বেড়ে উঠে। প্রায় ৪ বছরে একটি গোলমরিচ গাছ পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় । তখন প্রতিটি গাছে এক থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত গোলমরিচ উৎপাদিত হয়। 

গোলমরিচ চাষে অভিজ্ঞ আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির গোত্র প্রধান উ-থেন জানান, আষাঢ়/শ্রাবণ মাসে গোলমরিচের চারা রোপণ করা হয়। গাছের লতা থেকেই স্থানীয়ভাবে চারা উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত গোলমরিচ আহরণের পর শুকিয়ে রাখা হয়। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে এখানে এসে গোলমরিচ কিনে নিয়ে বাজারজাত করেন। 

জনৈক গোলমরিচ চাষী জানান, প্রায়ই গোলমরিচ গাছে মড়ক দেখা দেয়। বর্ষাকাল শেষে রোগাক্রান্ত গোলমরিচ গাছের গোড়া পঁচে গাছগুলো শুকিয়ে মরে যায়। এ ব্যাপারে কীটনাশক ব্যবহারের কার্যকর অভিজ্ঞতা না থাকায় গোলমরিচ গাছের মড়ক রোধ করা যাচ্ছে না। আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে অনেক গোলমরিচ গাছ ছড়িয়ে রয়েছে। এখানে বসবাসকারী ১২৫টি খাসিয়া পরিবারই পান,আনারস, লেবু চাষের মতই গোলমরিচ চাষেও বংশানুক্রমিকভাবে অভিজ্ঞ। আধুনিক পদ্ধতিতে গোলমরিচ চাষ এবং চাষিদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে জেলার পাহাড়ি এলাকায় মূল্যবান গোলমরিচ চাষের জমির পরিমাণ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। 

জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক নয়নমণি সূত্রধর জানান, আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে গোলমরিচ চাষের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হবে। এছাড়া, বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবন চা বাগান কর্তৃপক্ষকে বাগানের পরিত্যক্ত পাহাড়ি এলাকায় গোলমরিচ চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।