উপাচার্যের অর্থপাচারের সত্যতা পেল ইউজিসি
সিলেটের বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার বিরুদ্ধে ওঠা আচার্যের অনুমোদন ছাড়া বিদেশে অর্থ পাঠানো, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বেতন বাড়ানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দল। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ইউজিসির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা) মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
একই আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের ঠিকানা অনুমোদনের প্রমাণ, নিয়মবহির্ভূত সংবিধি প্রণয়ন ও জারির বিষয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ইউজিসিতে ব্যাখ্যা পাঠানোর জন্য উপাচার্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন তদন্ত করতে গত ২৭ জুলাই ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত দল ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে।
অনুমোদন ছাড়া বিদেশে অর্থ পাঠানোর বিষয়ে অফিস আদেশে বলা হয়, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মওলা বেস্ট ইউনিভার্সিটি অ্যাওয়ার্ড নামে একটি পদক পাওয়ার জন্য অক্সফোর্ড অ্যাওয়ার্ড এজেন্সি লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির কাছে টাকা পাঠান। এ জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের কাছ থেকে কোনো অনুমোদন নেননি। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।
সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই নিজের বেতন বাড়ানোর অভিযোগ আছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অফিস আদেশে বলা হয়েছে, অর্থ কমিটি ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়া বেতন বৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য নয়। তা ছাড়া, সুনির্দিষ্ট চুক্তি ছাড়া কোনো ব্যক্তির আয়কর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে দেওয়ার সুযোগ নেই।
দায়িত্ব হস্তান্তর ছাড়া বিদেশে অবস্থানের বিষয়ে বলা হয়েছে, উপাচার্য পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব কারও হাতে হস্তান্তর না করে দেশের বাইরে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
গতকালই ইউজিসির অপর এক আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দা জারিনা হোসেইন এবং সহযোগী অধ্যাপক রাজন দাশকে পুনর্বহাল এবং সাদিকা জান্নাত চৌধুরী ও নাবালক সাইদ আজমাইন আবদুল হাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে বাদ দিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও নিবন্ধকের কার্যালয় থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবদমান দুই পক্ষকে নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।