হরতাল-অবরোধে পর্যটক শিল্পে খরা
রয়েল ভিউ ডেস্ক: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন খাতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় নির্ধারিত ভ্রমণ বাতিল করেছেন অনেক পর্যটক।
এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় অনেকে বুকিং স্থগিত করেছেন। ফলে ভরা মৌসুমে পর্যটকশূণ্য হয়ে পড়েছে সুন্দরবন। বিপাকে পড়েছেন ট্যুর অপারেটররা। রাজস্ব হারাচ্ছে বনবিভাগ।
বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিট বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে পর্যটনের ভরা মৌসুম চলছে। অথচ সুন্দরবন পর্যটকশূন্য। পর্যটকরা সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য ইতিপূর্বে বুকিং দিয়ে রাখা বিভিন্ন জাহাজ ও লঞ্চের যাত্রা বাতিল করে দিচ্ছেন। চলমান হরতাল ও অবরোধের কারণে পর্যটকরা এ সময় সুন্দরবনে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। ফলে পর্যটন-ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মালিক ও শ্রমিকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
শরণখোলার স্থানীয় ট্যুর অপারেটর রাসেল আহমেদ ও আব্দুল হালিম বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে সুন্দরবনে পর্যটনের জন্য নৌযান প্রস্তত করেছি। অথচ হরতাল অবরোধের কারণে পর্যটক পাওয়া যাচ্ছে না। কর্মীদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের অন্যতম পর্যটন স্পট করমজল বণ্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেসস্টার আজাদ কবীর বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে করমজলে পর্যটকরা তেমন আসা যাওয়া করছে না। পর্যটকের অভাবে বনবিভাগও রাজস্ব হারাচ্ছে। তিনি জানান, মূলত নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সুন্দরবনের পর্যটনের মৌসুম। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সপ্তাহে পাঁচ-ছয় হাজার পর্যটক করমজলে আসা যাওয়া করে। বন বিভাগও সেখান থেকে লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব আদায় করে। কিন্তু এ বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৪-৫ শত পর্যটক করমজল ভ্রমণ করেছে। এ থেকে বনবিভাগ মাত্র ২৫-৩০ হাজার টাকার মতো রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে। গত বছর পর্যটন মৌসুমের চার মাসে করমজলে পর্যটন খাতে বনবিভাগ ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল বলে জানান তিনি।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার সুরজিত চৌধুরী বলেন, কটকা পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে বলে বলা যায়। আগে প্রতিদিন গড়ে ১২-১৪টি পর্যটকবাহী জাহাজ ও লঞ্চ কটকায় আসা যাওয়া করত। কিন্তু গত এক সপ্তাহের মধ্যে একটি নৌযানও আসেনি ককটায়। সবশেষ গত ২৫ অক্টোবর ১৪টি এবং ২৮ অক্টোবর ১২টি পর্যটকবাহী লঞ্চ জাহাজ কটকায় এসেছিল। হরতাল অবরোধের কারণে পর্যটকরা এখন সুন্দরবনে যাচ্ছে না বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।