ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়সসীমা হতে পারে উনত্রিশের বেশি, উৎকণ্ঠায় পদপ্রত্যাশীরা

ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়সসীমা হতে পারে উনত্রিশের বেশি, উৎকণ্ঠায় পদপ্রত্যাশীরা
রয়েল ভিউ ডেস্ক:
ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন পার হয়েছে ১৪ দিন। গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন মঞ্চে নতুন কমিটি ঘোষণার রেওয়াজ থাকলেও মাঝেমধ্যেই এর ব্যত্যয় ঘটে। এ বছরও সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন পদপ্রত্যাশীরা। সারা দেশের নেতাকর্মীরা অপেক্ষায় রয়েছেন নতুন নেতৃত্বের জন্য।
 
তবে সবকিছু ছাপিয়ে সম্মেলনের দিন থেকেই আলোচনায় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বয়সসীমা। গঠনতন্ত্র অনুসারে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বের বয়সসীমা ২৭ বছর। তবে প্রতি সম্মেলনেই ২ বছর বাড়িয়ে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয় ২৯ বছর। আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, মহামারি করোনার কারণে স্থবির ছিল পুরো দেশ। সে পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর বয়সসীমা আরও বাড়তে পারে।
 
ছাত্রলীগের নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সংগঠনের শীর্ষ দুই পদ পেতে ২৫৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী থাকলেও শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনায় রয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড নেতৃত্বের দৌড়ে থাকাদের মধ্যে থেকে সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। করোনাকালীন ইতিবাচক কাজ, পারিবারিক রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, সংগঠনে সক্রিয়তাসহ নানা বিষয় খোঁজ নিচ্ছে হাইকমান্ড।
 
এসব তথ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত করবেন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্র বলছে, ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রলীগের কমিটি সম্মেলনের আগে না পরে ঘোষণা করা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
 
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনে সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নির্বাচিত হন; কিন্তু চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে এক বছর পেরোতেই তাদের পদচ্যুত করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সংগঠনের দায়িত্ব পান আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তবে এ দুই শীর্ষ নেতাকে নিয়েও স্বস্তিতে ছিল না আওয়ামী লীগ। কমিটি বাণিজ্য, কেন্দ্রীয় কমিটিতে গণপদায়নসহ নানা অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।
 
আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকটি সূত্র মারফত জানা গেছে, বয়সসীমা এবার আরও বাড়তে পারে। গঠনতন্ত্রে ২৭ বছর উল্লেখ থাকলেও ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে বয়সসীমার রেওয়াজ ২৯ বছর। তবে মহামারি করোনার কারণে এবার বয়সসীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে পারেন ঢাবি ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান), সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার জামী উস সানী, কর্মসংস্থানবিষয়ক উপসম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়।
 
এ ছাড়া প্রথমবারের মতো ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে পারেন একজন নারীনেত্রী। এ ক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছেন কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সাবেক সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদার।
 
এর বাইরেও আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সুদৃষ্টিতে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তবে বয়সের বাধ্যবাধকতায় তিনি বাদ পড়তে পারেন। সূত্র বলছে, সনজিত শীর্ষ নেতৃত্বের দৌড়ে বাদ পড়লেও তাকে আওয়ামী লীগের দলীয় অন্য কোনো দায়িত্বশীল কাজে লাগানো হবে।
 
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালবেলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য শর্ট লিস্ট করা হয়। বিভিন্নভাবে বাছাই করা হয়। আদর্শিক, ত্যাগী ও সেরার সেরাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়।’ কোনো সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া হয়েছে।’