তাইওয়ানের তাড়া খেয়ে পালালো ৩০টি চীনা যুদ্ধবিমান

তাইওয়ানের তাড়া খেয়ে পালালো ৩০টি চীনা যুদ্ধবিমান

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করা ৩০টি চীনা যুদ্ধবিমানকে তাড়া করে সীমানা ছাড়তে বাধ্য করেছে তাইওয়ানের বিমানবাহিনী। সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার এই দ্বীপ ভূখণ্ডের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় পারাতাস দ্বীপের আকাশসীমায় ৩০টি যুদ্ধবিমান প্রবেশ করে। সীমানায় অনুপ্রবেশের অল্প সময়ের মধ্যেই এসব বিমান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (এআইডিজেড)।

তারপর এআইডিজেডের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে তাইওয়ানের বিমানবাহিনীর ২২ টি বোমারু বিমান তাড়া করা শুরু করে অনুপ্রবেশকারী বিমানগুলোকে এবং একসময় পিছু হটতে বাধ্য হয় চীনা যুদ্ধবিমানগুলো।

গত বছরের মাঝামাঝি থেকে বিভিন্ন সময়ে তাইওয়ানে কয়েক বার অনুপ্রবেশ করেছে চীনা যুদ্ধবিমান। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এই ধারা বজায় ছিল।

তারপর কয়েক মাস বিরতির পর ফের শুরু হলো তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনের অনুপ্রবেশ এবং সোমবার চলতি বছরের হিসেবে তাইওয়ানের আকাশসীমায় সর্বোচ্চসংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাইওয়ান ইস্যুতে চীনকে সতর্কবার্তা দেওয়া এবং রোববার বাইডেন প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাইওয়ানের সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা বৈঠক করতে সেই দ্বীপ ভূখণ্ড সফরের পরদিনই ঘটল এ ঘটনা।  

 তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের যুদ্ধ বিমান পারাতাস দ্বীপের আকাশসীমায় প্রবেশ করলেও তাইওয়ানের আকাশসীমা অতিক্রম করার কোনো প্রবণতা সেসবের মধ্যে দেখা যায়নি। যদি এমন হতো, তাহলে সেটি চরম বৈরী আচরণ হিসেবে গণ্য করা হতো।

১৯৪০ সালের গৃহযুদ্ধে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় তাইওয়ান। তারপর থেকে তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী রাজনীতিকরা নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বলে দাবি করলেও চীন এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে এখনও নিজেদের অংশ বলে দাবি করে।

৩৬ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপ ভূখণ্ডের রয়েছে নিজস্ব সংবিধান, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্ব এবং প্রায় ৩ লাখ সক্রিয় সেনা সদস্যের একটি সেনাবাহিনী।

তবে এখন পর্যন্ত খুবই অল্প কয়েকটি দেশ তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকলেও তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত নিজেদের কোনো দূতাবাস খোলেনি দেশটি।

তবে তাইওয়ান বিষয়ক একটি আইনের আওতায় এই স্বাধীনতাকামী দ্বীপভূখণ্ডকে গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকেই সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত সপ্তাহে আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট কোয়াডের বৈঠকে যোগ দিতে জাপান গিয়েছিলেন জো বাইডেন। সেখানে তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ নিয়ে চীনকে সতর্কবার্তা দেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে বলেন, ‘তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের মাধ্যমে চীন আসলে বিপদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।’