তৃতীয় দফায় ডাকা অবরোধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পিকেটিং নগরীতে বেড়েছে গাড়ির চাপ

তৃতীয় দফায় ডাকা অবরোধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পিকেটিং নগরীতে বেড়েছে গাড়ির চাপ

রয়েল ভিউ ডেস্ক: বিএনপির তৃতীয় দফায় ডাকা অবরোধের প্রথম দিন গতকাল বুধবার সকাল থেকে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে ওসমানীনগর ও দক্ষিণ সুরমায়  পিকেটিং হয়েছে। পুলিশ এক পিকেটারকে গ্রেফতারও করেছে। অবশ্য নগরীর অভ্যন্তরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা এবং প্রাইভেট কার চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে দূরপাল্লার দুএকটি বাস সিলেট ছেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। 

সরেজমিনে কদমতলী বাসটার্মিনাল ও কুমারগাঁও বাস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, দিনের বেলা সিলেট থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। তবে, জেলার ভেতরে কয়েকটি যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে দুএকটি বাস ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, বাসে যাত্রীসংখ্যা ছিল একেবারে কম। এছাড়া, দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে ঢাকার যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়। যাত্রীরা জানান, অবরোধের কারণে তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঢাকা যেতে হচ্ছে।

বিকেলে কদমতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাস টার্মিনালের কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। বাসচালক, চালকের সহকারী ও কাউন্টারের কর্মীদের গল্পে মেতে থাকতে দেখা যায়।  এছাড়া সকালে লালাবাজার এলাকায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে কিছু ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা ও মাইক্রোবাস চলাচল করেছে, তবে মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করতে দেখা যায়। পুলিশের টহল দলের গাড়ি বেশ তৎপর ছিলো।

অপরদিকে বুধবার সকালে ওসমানীনগর উপজেলার মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন দিয়ে পিকেটিং করেন অবরোধ সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে উনিশ মাইল এলাকায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন লাগান অবরোধ সমর্থকরা। এ সময় অনেকের মাথায় মাফলার মোড়ানো ও হেলমেট পরা ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধ সমর্থনকারীরা সেখান থেকে চলে যান। 
ওসমানীনগর থানার ওসি মাছুদুল আমিন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। 
এদিকে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বদিকোনা এলাকায় পিকেটিং করার সময় যুবদল নেতা আখতার হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আখতার দক্ষিণ সুরমা যুবদলের সদস্য। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা বলেন, পিকেটিং করার সময় আখতার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে।
সিলেট নগরীর টুকেরবাজারের সিএনজি অটোরিকশা চালক মুহিন জানান, সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক বলেছেন, অবরোধে নিজ জিম্মায় গাড়ি চালাতে। ক্ষয়ক্ষতি হলে আমাকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এর জন্য ঝুঁকি নিয়ে হলেও পেট বাঁচাতে গাড়ি চালাচ্ছি। 
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গণতান্ত্রিক নিয়মেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এতে সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন অন্যায়ভাবে তাদের নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়ন করছেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপির ডাকা অবরোধ সমর্থনে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি চলমান। এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সমর্থন দিচ্ছেন। বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।