দাদা-দাদির পাশে শায়িত হবেন হাদিসুর

দাদা-দাদির পাশে শায়িত হবেন হাদিসুর

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
বরগুনায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ। সেখানেই দাদা-দাদির পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টায় জানাজা শেষে বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

বিষয়টি জানিয়েছেন নিহত হাদিসুরের চাচা ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। সেখানে হাদিসুরের মরদেহ গ্রহণ করেন তার ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন।

ভাইয়ের কফিন ছুঁয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিন্স। তার আহাজারিতে বিমানবন্দরের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। এরপর বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বরগুনার বেতাগীর হাসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে রওনা হন পরিবারের সদস্যরা। হাদিসুর ওই এলাকায় নাদেরিয়া মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে হাদিসুর মেজো। মরদেহ গ্রহণ করার পর শওকত হাসানুর রহমান রিমন সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠিন পদক্ষেপের কারণে আমরা হাদিসুরের মরদেহ তার বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি।

এদিকে রোববার সকালে হাদিসুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি করে রাখা হয়েছে। তার বাড়ির উঠানে টাঙানো হয়েছে সামিয়ানা, বসার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে চেয়ার।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জলসীমায় নোঙর করে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি উদ্ভূত হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। জাহাজটি ২৯ জন নাবিক-ক্রু নিয়ে ওখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে।

বাংলাদেশ সময় গত ২ মার্চ রাত ৯টা ২৫ মিনিট জাহাজে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিস্ফোরণে মারা যান জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জাহাজে আটকে থাকা বাকি ২৮ নাবিক-ক্রু।

এরপর টাগবোটের সাহায্যে তাদেরকে ৩ মার্চ সন্ধ্যায় তীরে আনা হয়। তাদের রাখা হয় ইউক্রেনের অলভিয়া এলাকার একটি বাংকারে। সেখান থেকে ৫ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় সড়কপথে যাত্রা শুরু করেন। ৬ মার্চ সন্ধ্যায় ২৮ নাবিক-ক্রু রোমানিয়ার একটি হোটেলে পৌঁছান।

গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিক-ক্রু দেশে ফিরেছেন। বুখারেস্ট থেকে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে এদিন দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তারা।