‘নিখোঁজ’ তরুণদের সশস্ত্র হামলা-বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়

‘নিখোঁজ’ তরুণদের সশস্ত্র হামলা-বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
হিজরতের নামে স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ হিসেবে সশস্ত্র হামলা ও বোমা তৈরি শেখানো হয়েছিল। মূলত ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) নামে একটি জঙ্গি সংগঠনে তাদেরকে ভেড়ানো হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে গত বুধবার রাতে মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ‘নিখোঁজ’ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- হোসাইন আহম্মদ, নেছার উদ্দিন উমায়ের, বণি আমিন, ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত, মো. হাসিবুল ইসলাম, রোমান শিকদার ও মো. সাবিত। তাদের কাছ থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের তিন ধরনের প্রচারপত্র, বিস্ফোরক তৈরির নির্দেশিকা সম্বলিত পুস্তিকা, সংগঠনের কর্মপদ্ধতি, জিহাদি ভিডিও জব্দ করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হিজরতে করা তরুণ গ্রেপ্তার হোসাইন আহম্মদ পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনিই মূলত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কতিপয় সদস্যকে একত্রিত করে ২০১৭ সালে নব্য সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয় সংগঠনটির নামকরণ করেন। এই সংগঠনের নেতারাই মূলত নতুন তরুণদের তাদের দলে ভেড়ানোর কাজ করছিলেন। কুমিল্লার নিখোঁজ যুবকরা স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহর মাধ্যমে প্রথমে সংগঠন সম্পর্কে ধারণা পান।’

এসময় ওই যুবকদের পার্শ্ববর্তী দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রদান ও বিভিন্ন ভিডিও দেখানো হতো। এভাবে তাদেরকে সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ্রহ তৈরি করা হয়।

কমান্ডার মঈন জানান, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার রোমান স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য ৪০ দিন আগে নিরুদ্দেশ হন। আর গ্রেপ্তার সাবিত দুই মাস আগে পটুয়াখালী থেকে নিখোঁজ হন। কুমিল্লার তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পটুয়াখালী, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণ ‘নিখোঁজ’ হন। এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়, যা দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে র‍্যাব নিখোঁজদের উদ্ধারে ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বাড়ি ছেড়েছিল। পরে ৬ সেপ্টেম্বর চার তরুণকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় র‍্যাব।