পুলিশ-বিচারকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল মনিরের

পুলিশ-বিচারকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল মনিরের

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা মনির ২০০৭ সালে শ্রমিক হিসেবে বাহরাইন যান। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আবারও বাহরাইনে যান। সেখানেই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন রেডিক্যালাইজড (মৌলবাদী) কনটেন্ট দেখে নিজে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। জঙ্গি সংগঠন গাজওয়াতুল হিন্দে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের বিচারক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশে আসেন মনির। হামলা চালিয়ে আবারও বাহরাইনে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

এর মধ্যে শনিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনির আব্দুর রাজ্জাককে (৪০) গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরিরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

আসাদুজ্জামান বলেন, মনিরের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজস পাওয়া যায়নি। সাইবার স্পেসে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখে নিজেই উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। তিনি বলেন, নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব কন্টেন্ট শেয়ার করতেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার ডিভাইস বিশ্লেষণ করে ভয়ংকর তথ্য পাওয়া গেছে।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেলফ রেডিক্যালাইজড’ মনির একপর্যায়ে জিহাদের প্রস্তুতি নেন। তারই অংশ হিসেবে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন। পুলিশ ও বিচারকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। ঘটনা ঘটিয়ে আবারও বাহরাইন ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।

নিজে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি মনির অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করতেন উল্লেখ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি গাজওয়াতুল হিন্দের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিতেন।

‘বাহরাইনে তার পাকিস্তানি এক সহকর্মীর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে পাকিস্তানি পরিচয় দিয়ে একটি আইডি খোলেন। সেটি দিয়ে সরকারবিরোধী নানা রকমের উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন মনির। তার ধরণা ছিল, যেহেতু তিনি বিদেশে, তাই তাকে কেউ ধরতে পারবে না।’

সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, দেশে এসে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছদ্মবেশে বিভিন্ন জায়গা রেকি করেন। এ অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। আমরা মনে করছি, তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একটি বড় ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো। তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে তার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, তার কিছু সহযোগীর নাম আমরা পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারে কাজ চলছে। গ্রেফতার মনিরকে রিমান্ডে নিতে প্রার্থনা করে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি তাকে রিমান্ডে পাবো। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।