বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক আলী দেহে বয়ে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন

বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক আলী দেহে বয়ে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন

মো: ফিরুজুল ইসলাম চৌধুরী, শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে : হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বাগুনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিদ্দিক আলী একজন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। উপজেলার বাগুনীপাড়া গ্রামের মৃত কলিম উল্লার ছেলে মো. ছিদ্দিক আলী। তিনি বর্তমানে কৃষি কাজে সময় কাটান। তার দুই ছেলে, তিন মেয়ে। এক ছেলে মনসুর আহমেদ শিপন যিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অন্যজন আলী আহমেদ (আলী) বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। ছিদ্দিক আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ দেখতে চান তিনি। আর জাতির পিতার ইচ্ছা পূরণে কাজ করায় তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তার বাড়িতেই কথা প্রসঙ্গে ছিদ্দিক আলী জানান, একাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষণ শোনার পর মনে স্পন্দন জাগ্রত হয়, যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে অনুপ্রেরণা যোগায়। তখনকার সময় তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম ষোলশহরের সেনা ক্যাম্পে। সেখানে ২৫ মার্চ রাত থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট, রামগড়সহ বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে লড়াই করে ভারতের হরিয়াণা ক্যাম্পে ১ মাস অবস্থান করেন। পরে শিলং গোহাটিসহ ভারতের বিভিন্ন শহর ঘুরে ময়মনসিংহ ও রংপুর সীমান্ত এলাকার কামালপুর ও রউমারিতে লড়াই করে আবারও ভারতের করিমগঞ্জে চলে যান। সেখান থেকে জকিগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিনি সিলেটের টিলাগড়সহ বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সমরে লড়াই করেন ।
তিনি বলেন, সিলেটের টিলাগড় ও জকিগঞ্জ এবং কানাইঘাটের মাঝখানের আটগ্রামে লড়াইয়ে অনেক পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়া, পাকসেনাদের সাথে তুমুল লড়াই হয়েছে চট্টগ্রামের রামগড় ও ভারতের সাবরুমে। বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে ১৬ ডিসেম্বর তিনি শ্রীমঙ্গল সেনাবাহিনী ক্যাম্পে আসেন। সেনাবাহিনীর কর্পোরাল পদে প্রায় ১৮ বছর দায়িত্ব পালন শেষে তিনি ১৯৮৯ সালের ২৫ মার্চ অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, কখনো ছেঁড়া প্যান্ট, কখনো লুঙ্গি আর টুপি কিংবা হুজুরের বেশ ধরে যুদ্ধ করতে হয়েছে। আমার শরীরে যুদ্ধে আহত হওয়ার বেশ কিছু দাগ স্মৃতি হিসেবে রয়েছে। হাত পা দিয়ে হামাগুড়ি দিতে দিতে জীবন বাঁচাতে কখনো কখনো পাড়ি দিতে হয়েছে পাহাড়। পায়ে ও কনুইতে এখনো কালো দাগের চিহ্ন রয়েছে।