বাংলাদেশ এখনই ব্রিকসের  সদস্য হওয়ার চেষ্টা করেনি

বাংলাদেশ এখনই ব্রিকসের  সদস্য হওয়ার চেষ্টা করেনি

রয়েল ভিউ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখনই ব্রিকসের সদস্য হওয়ার চেষ্টা করেনি বরং ব্রিকস রাষ্ট্রগুলোর প্রতিষ্ঠিত বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে আমরা সদস্যপদ পাব এমন কোনো চিন্তা আমাদের ছিল না। আমরা এমন কোনো চেষ্টা করিনি, এমনকি কাউকে বলিওনি (ব্রিকসের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য)।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
এখনই ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে হবে এমন কোনো চিন্তা বাংলাদেশের ছিল না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এখনই সদস্য পদ পেতে হবে সেই ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায়ও ছিল না। সেই ধরনের চেষ্টাও আমরা করিনি। চাইলে পাবো না সেই অবস্থায় এখন আর বাংলাদেশ নেই। আমরা কাউকে বলতে যাইনি আমাকে এখনই সদস্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা কাজের একটা নিয়ম থাকে। আমরা সেই নিয়ম মেনেই চলি। আমার সাথে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হলো, আমাকে আমন্ত্রণ জানালেন ব্রিকস সম্মেলন করবেন। আমাকে আসতে বললেন। তখন আমাকে এও জানালেন তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেনও। সেই বিষয়ে আমার মতামতও জানতে চাইলেন। আমি বললাম, এটা খুবই ভালো হবে। ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন এই পাঁচটি দেশের সরকার প্রধানের সাথে আমার ভালো যোগাযোগ সব সময় ছিল এবং এখনো আছে। সেই সময় এটা নিয়ে আলোচনা হলো পর্যন্ত।
ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশ আগে থেকেই আগ্রহী ছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা যখন শুনলাম নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হবে, আমাদের ওটার ওপর বেশি আগ্রহটা ছিল। যখন থেকে তৈরি হয়, তখন থেকেই এই আগ্রহটা ছিল এর সাথে যুক্ত হবো। ব্রিকসের সদস্য পদের ক্ষেত্রে তখন প্রেসিডেন্ট আমাকে বললেন ধাপে ধাপে নেবেন। ভৌগোলিক অবস্থানটা বিবেচনা করে নেবেন। পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে তারা সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নিলে আমরা খুব খুশি। তবে ব্রিকসের এখনই সদস্যপদ পাবো, প্রথমবারেই যেয়েই সদস্য পদ পাবো, সেই ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না। সেই ধরনের চেষ্টাও আমরা করিনি। সেইভাবে কাউকে বলিওনি। সেখানে তো সব রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের সাথে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবার সাথে। আমরা কাউকে বলতে যাইনি আমাকে এখনই সদস্য করেন। তখন থেকে আমরা জানি যে প্রথমে কয়েকজনকে নেবে। লাঞ্চের সময় ব্রাজিল ও সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এবং নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের সাথে আলোচনা হয় যে তারা এই কয়জন নেবে। এরপর ধাপে ধাপে তারা সদস্য পদ বাড়াবে।
ব্রিকস নিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি যে এই প্রশ্নটা আসবে। আমাদের অপজিশন (বিরোধী পক্ষ) থেকে হা-হুতাশ করা হচ্ছে যে আমরা সদস্যপদ পাইনি। বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না এটা কিন্তু ঠিক নয়। অন্তত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা দেশের মর্যাদাটা তুলে ধরেছি। সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে। তারা (বিরোধী পক্ষ) বলতে পারে কারণ বিএনপির আমলে ওটাই ছিল। তাদের সময় বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের কোনও অবস্থানই ছিল না। বাংলাদেশ মানে ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, ভিক্ষার দেশ। হাত পেতে চলার দেশ। এখন সবাই জানে বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ নয়। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন মাথা উঁচু করে চলে।