সিলেটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস পালিত

বিশ্বের শান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ: মেজর জেনারেল হামিদুল হক

বিশ্বের শান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ: মেজর জেনারেল হামিদুল হক

স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২ গতকাল রোববার সিলেট সেনানিবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের অনবদ্য অবদানের কথা স্মরণ করে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও দিবসটি বিশেষ গুরুত্বের সাথে উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হামিদুল হক, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি। শুরুতে প্রধান অতিথি বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, চৌত্রিশ বছর ধরে পেশাদারিত্ব, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং অভিজ্ঞতার কারণে আজ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আদর্শ হিসেবে স্বীকৃত। বিশ্বের শান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত।’ দিবসটি উপলক্ষে সকালে সিলেট সেনানিবাসে আয়োজিত ‘পিসকিপারস কমেমরেইশন’ অনুষ্ঠানে সিলেট এরিয়র সামরিক সদস্যগণ ও পদস্থ অসামরিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, স্থানীয় ইউএন প্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত সদস্যদের বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় আত্মত্যাগের অবদান স্মরণ করতে বিশ্বব্যাপী ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও পুলিশের যে সকল সদস্য জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সর্বোচ্চ আত্নত্যাগ কিংবা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের সকলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে সিলেট সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপিত হয়। 

উল্লেখ্য, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত ১৯৪৮ সাল হতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালের আগষ্ট মাস হতে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রয়াসের সাথে সম্পৃক্ত হয়। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে মোট ১৪টি দেশে ৬ হাজার ৮২৫ জন সামরিক ও পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছেন। শান্তিরক্ষার এই সুমহান দায়িত্ব পালন কালে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সর্বমোট ১৬১ জন সদস্য জীবনোৎসর্গ করেছেন এবং ২৫২ জন সদস্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।

প্রধান অতিথি বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দূরদর্শিতা, সংবিধানের দিক নির্দেশনা, মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুপ্রেরণা এবং প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের শান্তিরক্ষীদের অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ আমরা বিশ্বের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। সেই সাথে সম্প্রতি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের সদস দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের অন্তর্ভূক্তি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক ও গৌরবের একটি বিষয়। ভবিষ্যতেরও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।