মানবসেবার ধ্রুবতাঁরা চিকিৎসক নূরুল হুদা নাঈম

মানবসেবার ধ্রুবতাঁরা চিকিৎসক নূরুল হুদা নাঈম

রয়েল ভিউ ডেস্ক::

সিলেটের জননন্দিত চিকিৎসক নূরুল হুদা নাঈম বলেছেন,‘আমি আমার অবস্থান থেকে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। আমি সকল সময় অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদান করি। আমি সারাজীবন এই কল্যাণকর কাজ করে যাব। শত বাধা এলেও আমি আমার অবস্থান থেকে সরে যাব না। আমৃত্যু গরীব, দুঃখি, অসহায় মানুষের পাশে থেকে মানবতার জয়গান গাইবো।’ 

তিনি বলেন, মানুষকে সাহার্য্য-সহযোগিতা করলে কোনো ক্ষতি হয় না। মানুষকে অন্তর থেকে ভালোবাসলে মন-প্রাণে তৃপ্তি পাওয়া যায়।

সিলেটের প্রথম ইএনটি লেজার সার্জারি ও এন্ডোসকোপিক সার্জারির পাইওনিয়ার-এর প্রবর্তক  ডা. নূরুল হুদা নাঈম। তিনি সর্বাধুনিক একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানীও।

তিনি তার কাছে কোনো রোগী আসলে ভালো করে গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসা সেবা দেন। রোগীর প্রতি তার নিবিড় পরিচর্যায় রোগী দ্রুত ভালো হয়ে উঠেন। ডা. নুরুল হুদা নাঈমের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সিলেটসহ সারা দেশে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে শিক্ষিত জনপদ সিলেটের গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর। এই ভাদেশ্বরের খমিয়াপতন গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন ডা. নূরুল হুদা নাঈম। প্রথমে তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয় তার মমতাময়ী মায়ের কাছে।

গ্রামের স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে পাড়ি জমান উপজেলার মীরগঞ্জ বিদ্যালয়ে। ১৯৮৮ সালে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন সিলেট এমসি কলেজে। ১৯৯০ সালে এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন সিলেট এমএজি ওমসানী মেডিকেল কলেজে।

এববিবিএস ও ইন্টার্নি পাশ করেন সিলেট এমএজি ওমসানী মেডিকেল কলেজ থেকে। পরে ঢাকায় বাংলাদেশ কলেজ ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জন থেকে এম.সি.পি.এস ও এফ.সি.পি.এস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর আর তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি। ভারত ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিশে^র সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ‘লেজার ও হেড-নেক ক্যান্সার সার্জারি’ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। সেসব দেশে একজন অনন্য মেধাবী প্রশিক্ষণার্থীর পরিচয় দেন তিনি।

মা-বাবার সংসারে ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ৫ম ডা. নূরুল হুদা নাঈমের অবস্থান। বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ওসমানী হাসপাতালের নাক-কান ও গলার হেড-নেক সার্জন হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। শিক্ষাজীবনে তিনি একটি মেডিকেল কোচিং সেন্টারের পরিচালক ছিলেন।

সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে বেশ সক্রিয়ও ছিলেন তিনি। সেই সময়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় তাঁর অনেক লেখা, কবিতা, ছড়া, গল্প ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এখনও তিনি সমাজসচেতনতামূলক লেখালেখি অব্যাহত রেখেছেন আপনমনে। ডা. নূরুল হুদা নাঈম চিকিৎসক থেকে এখন একজন দক্ষ ও বড়মাপের চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং অনন্য মানবপ্রেমী হিসেবে অক্লান্ত কাজ করে চলেছেন।

গরিব-দুঃখী মানুষের চিকিৎসাসেবা প্রদানের মানসিকতাই তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। নাক-কান ও গলার কোন রোগী তার কাছে গিয়ে আর্থিক অনটন বা অক্ষমতার কথা তুলে ধরামাত্রই তিনি লেগে যান তার মানবসেবার কাজে। ট্রিটমেন্ট, প্যাথলজি খরচ, ঔষধ সবকিছু তিনি তার কাঁধে তুলে নেন।

গরিব-দুঃখী অসহায় মানুষের সেবাকে তিনি তার জীবনের স্বার্থকতা মনে করেন। এজন্যই তার এতো জনপ্রিয়তা। চিকিৎসা অঙ্গনে বিপন্ন রোগীকে আপন করে নেয়ার মানসিকতা ও ক্ষমতা আছে বলে তিনি চিকিৎসা জগতের এক অনন্য উচ্চ আসনে আজ উপনীত হয়েছেন। ‘আমি পারবোই’ এই প্রবল আত্মবিশ্বাসই তাঁর সব সাফল্যের চাবিকাঠি। অনেক প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তার আজকের এই আলোকিত সুন্দর গন্তব্য। ছুটে চলছেন তিনি অনন্য মানবসেবায়।

গত ২০১১ সালে বাংলাদেশে প্রথম এনজেএল ইএনটি সেন্টারের উদ্যোগে তিনি শুরু করেন ‘গর্বিত মা-বাবা সম্মাননা শীর্ষক অনুষ্ঠান, যা সারাদেশে এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৃষ্টি করে তুমুল আলোড়ন।

সরকারি চাকুরি  যথাযথ দায়িত্বপালনের পাশাপাশি তিনি সিলেটের কাজলশাহ এলাকায় চালু করেছেন একটি অত্যাধুনিক ইএনটি হাসপাতাল। গরিব-দুঃখী রোগীদের অত্যন্ত ব্যয়বহুল কানের পর্দা জোড়া লাগানোর মাধ্যমে মানুষকে বেঁচে থাকার সাহস যুগিয়ে থাকেন তিনি। ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক, ফ্রি অপারেশন, ‘আসুন জন্মদিনে একটি ভালো কাজ করি’-এ স্লোগান নিয়ে ফ্রি কানের পর্দা জোড়া লাগানোর অপারেশন করে থাকেন তিনি।

চিকিৎসক নূরুল হুদা নাঈম প্রতিবছর তিনি ৫ থেকে ১০জন রোগীর ফ্রি কানের পর্দা জোড়া লাগানোর সার্জারি চালিয়ে আসছেন। চিকিৎসা ও মানবসেবায় বিভিন্ন সময়ে একাধিক সংস্থা ও সংগঠন থেকে সম্মাননা পদকও লাভ করেন তিনি। শুধু চিকিৎসা নয়, সামাজিক কর্মকা- ও আর্তমানবতার সেবায়ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকেন প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. নূরুল হুদা নাঈম।

মানবতার সেবক ডা. নূরুল হুদা নাঈম প্রতি ঈদে গরীব দুঃখী মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন র‌্যালি সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করে থাকেন।

ডা. নূরুল হুদা নাঈমের স্বপ্ন একটি ‘চ্যারিটেবল ক্যান্সার হাসপাতাল’ স্থাপন। এটা করতে পারলে চিকিৎসা ও মানবসেবার জগতে আরও একধাপ এগিয়ে যাবেন তিনি। খ্যাতনামা চিকিৎসক নূরুল হুদা নাঈমের স্বপ্ন-আশা পূরণ হোক।

তিনি এগিয়ে যান আলোকিত দিগন্তে। অগণিত মানুষের অনাবিল ভালোবাসায় সিক্ত হোন অনন্তকাল। মানবতার ফেরিওয়ালা ডা. নূরুল হুদা নাঈম তাঁর মমন ও চিন্তায় মানবসেবাই জাগ্রত থাকুক চিরকাল। গঠন করুন আলোকিত সুন্দর ও সৃজনশীল সমাজ। জয় হোক চিকিৎসক নুরুল হুদা নাঈমের।